অত্যাধুনিক ই-পাসপোর্ট দিলেও নানা সীমাবদ্ধতায় কাঙ্ক্ষিত সেবার মানে অনেকটাই পিছিয়ে রাজধানীর আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস। এ অফিসকে ঘিরে এখনো দালালের দৌরাত্ম্যের পুরনো চিত্র। এ নিয়ে সেবাগ্রহীতাদের ক্ষোভ থাকলেও দালাল ধরে টাকার বিনিময়ে কোনো কাজ করা যায় না বলে জানান পরিচালক।
পাসপোর্ট করার নিয়ম সহজ। কিন্তু সেই নিয়ম অনুযায়ী করতে গেলে পোহাতে হয় নানা ঝক্কি-ঝামেলা। অথচ পাসপোর্ট অফিসের সামনে কিছু পয়সা খরচ করলেই সবকিছু খুব সহজ হয়ে যায়।
পাসপোর্টের অনলাইন আবেদনের কাজে সহায়তা করতে আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের ঠিক সামনেই অস্থায়ী দোকানগুলো ঘিরে যেন সব সমস্যার সমাধান। ছবি তোলার তারিখ, ব্যাংকে টাকা জমা, যে কোনো সংশোধন, বাসার বৈদ্যুতিক বিলের কাগজ। এ ছাড়া টাকা দিলেই পাওয়া যায় পুলিশ ভ্যারিফিকেশনও।
দীর্ঘ সারি আর সময় ও ঝামেলা এড়াতে এমন তৃতীয় পক্ষের দ্বারস্থ হন সাধারণ মানুষ। অনেক ক্ষেত্রে কাজ তো হয়ই না, বরং খোয়ান বড় অঙ্কের অর্থ।
পাসপোর্ট করতে আসা এক নারী নানা অভিযোগ তুলে ধরেন সময় সংবাদের কাছে। এ বিষয়ে জানতে অফিসের সড়কের উল্টোপাশে ওই নারীর দেখানো দোকানে গেলে অস্বীকার করেন দোকানে থাকা দুই ব্যক্তি। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর সটকে পড়েন তারা।
অফিসে গিয়ে জানা গেছে, কথা থাকলেও সময়মতো পুলিশ ভেরিফিকেশন না আসা বা তথ্যের পরিবর্তন বা সংশোধন জটিলতায় সময়মতো পাসপোর্ট না পাওয়ার চিত্র পাল্টায়নি। আর বাড়তি আবেদনকারীর চাপে বেঁধে দেয়া তারিখে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের।
এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ এজেন্সির মাধ্যমে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করানোর কথা ভাবছে অধিদফতর। এ ছাড়া পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে লোকবল সংকটের কথা তুলে ধরে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান বিভাগীয় পাসপোর্ট অ্যান্ড ভিসা অফিসের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।
বিভাগীয় এ পাসপোর্ট অফিসে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকলেও বরাবরই সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সেবাগ্রহীতারা।
উপায়ন্তর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত দালালের হাতেই পাসপোর্ট করছে অনেক সাধারণ মানুষ। এতে সরকার নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে তাদের।
পাসপোর্ট অফিস দালাল মুক্ত হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সেবা মিলবে- এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।