লকডাউন শুনেই নিত্যপণ্য বাজারের দাম বাড়ল
নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : রবিবার, ২০২১ এপ্রিল ০৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে ৭ দিন লকডাউন হচ্ছে দেশ। এই একটি খবরেই ফের অস্থির বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাজার। চাল, ডাল, তেল, চিনি, ছোলা, সবজিসহ সব নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে খুচরা বাজারে। লকডাউনের খবরে আগাম নিত্যপণ্য কিনতে মুদি দোকান, কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় বাড়ে। এর সুযোগ নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করেছেন। কোথাও কোথাও পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলে। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকার সরকারি বাসভবনে সংবাদ ব্রিফিং করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে আগামীকাল সোমবার থেকে দেশে ৭ দিনের লকডাউন শুরু হবে বলে জানান।
সন্ধ্যা হতেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মুদি দোকানে মানুষের ঢল নামে। লকডাউনের দিনগুলোতে যেন ঘরের বাইরে আসতে না হয় সেজন্য আগাম নিত্যপণ্য কিনেছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাসের বাজার, রোজার বাজার এবং লকডাউনের বাজার একসঙ্গে হওয়ায় ক্রেতার চাপ বাড়ে খুচরা বাজারে। এর সুযোগ নিয়েই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল শনিবার সকালে ৩৫ টাকা কেজি দরের দেশি পেঁয়াজ বিকেলে বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। স্থানভেদে ৪৫ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে দেশি পেঁয়াজ। চালের দামও কেজিতে ৩-৭ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হয়েছে।
লকডাউনের এক ঘোষণায় প্রতি ডজন ডিমে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। ১৩৫-১৪০ টাকা লিটার দরের সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৫২ টাকা লিটার দরে। এছাড়া ডাল এবং ছোলাতেও কেজিতে ৫-৭ টাকা বেশি নেওয়া হয়।
নগরীর দুই নম্বর গেটের কর্ণফুলী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে- চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় প্রতিটি সবজি। এরমধ্যে কাঁকরোল কেজিপ্রতি ১১০-১২০ টাকায়, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকায়, বরবটি ৬৫-৭০ টাকায়, বাঁধাকপি ৮০-৯০ টাকায়, ফুলকপি ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কম থাকা এবং লকডাউনের খবরে সবজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকায় সবজির দাম বেশি। পাইকার থেকে বেশি দামে সবজি কেনায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
খুচরা বাজারে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম থাকায় নগরীর বিভিন্ন স্পটে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর ট্রাকে পণ্য কিনতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল গতকাল। সাধারণত ২০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হলেও এদিন ২৩টি ট্রাকে নগরীর ২৩টি স্পটে টিসিবির নিত্যপণ্য বিক্রি করা হয়।
টিসিবির ট্রাকে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকায় চিনি, লিটার প্রতি ১০০ টাকায় তেল, কেজিপ্রতি ৫৫ টাকায় ডাল, ২০ টাকায় পেঁয়াজ এবং ৫৫ টাকায় ছোলা বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান টিসিবি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিস প্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদ।
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা বলেন, লকডাউন বা অন্য কোনো অজুহাতে পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। ডিসি স্যারের নির্দেশে আমরা বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। অনিয়ম পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেকে না বুঝে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কিনে মজুদের চেষ্টা করেন। বাসাকে মিনি সুপারশপ বানিয়ে ফেলেন। এই কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এতে বাজারে চাপ তৈরি হয়। লকডাউন হলেও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকবে। তাই বাজার নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কিছু নেই।