বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এমন মন্তব্য করেছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে দেখা যায়নি। তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ভারতে যাওয়া ছাড়া, ভুয়া বাহিনী তৈরি করা ছাড়া তার কর্মকাণ্ডে মুক্তিযোদ্ধার কোনোকিছু ছিল না। কালুর ঘাটের প্রতিরোধের পরও ৯ মাস যুদ্ধ চলেছে, দেশের মানুষ দেশ স্বাধীন করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গোপালগঞ্জের আইন অনুষদের আয়োজনে 'বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: আইনি পর্যালোচনা' শীর্ষক বিশেষ আলোচনাসভায় রোববার (২৯ আগস্ট) ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, কোন বিজ্ঞপ্তিতে তিনি দেখেছেন খুনি জিয়াউর রহমান কালুরঘাটে প্রতিরোধ যদি গড়ে না তুলত তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।
তিনি বলেন, কালুরঘাটের প্রতিরোধের পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিল নাকি সৈন্যরা করেছিল, সেটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা থাকতে পারে। কথা হচ্ছে কালুরঘাটের সেই প্রতিরোধের পরেও কিন্তু ৯ মাস যুদ্ধ চলেছিল।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছরেও কোনো মামলা হয়নি। উল্টো যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার হবে না, এমন আইনও করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে এই মামলার এফআইআর হয়। ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলায় ৬১ জন সাক্ষী ছিল।
আইনমন্ত্রী বলেন, ইতিহাসে বিরল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের লাশ দেখার পর বলেছিলেন, 'আমি নিচে যাব না আমাকে এইখানে মেরে ফেল।' তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের বাকি সদস্যদের বলেছিলেন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও। সহধর্মিণী এক সেকেন্ডও বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাঁচতে চাননি।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, এরশাদের আমলে বাজেট তৈরি হতো প্যারিসে, ইতিহাস তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের বাজেট এখন ৬ লাখ কোটি টাকা। তিনি বলেন, যারা মনে করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শেষ করতে দিতে পারবে, তারা ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করেছেন জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুবের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথ ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান।