পদ পাওয়ার পরপরই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি।
এক সময়ের ছাত্রদল নেতা রানার সংগঠনে বড় পদ পাইয়ে দেয়ার নামে নারী কর্মীদের অনৈতিক প্রস্তাব ও কৌশলে সভাপতি পদ বাগিয়ে নেয়ার ফোনালাপ এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল।
অন্যদিকে, ভাইরাল হয়েছে সাধারণ সম্পাদক অমির মাদক সেবনের ভিডিও। পরিস্থিতি সামাল দিতে রানা ও অমির অপকর্ম তদন্তে কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সম্প্রতি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানার সঙ্গে এক কর্মীর মোবাইল ফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে এখন সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে।
সেখানে শোনা যায়, সংগঠনে পদ পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে নারী কর্মীদের অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা।
চার মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই অডিওতে এক নারী ছাত্রলীগ কর্মীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন রানা। এ ছাড়া ওই কর্মীকে ভয়ভীতি দেখাতে শোনা যায় রেকর্ডে।
ফোনালাপের এক পর্যায়ে রানা বলেন, বহুত বড় চিটারি-বাটপারি কইরে আমি প্রেসিডেন্ট হইছি,
এক সময় ছাত্রদল করতেন রানা, ছিলেন রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাস শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক। একথা নিশ্চিত করেছেন সে সময়ের কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি।
রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুর্তজা ফামিন বলেন, কলেজ ছাত্রদলের নেতা ছিলেন রানা। মুসলিম হল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্রদলের মিছিল-মিটিং করতেন।
এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের একটি ছবিতেও দেখা যায় রানাকে।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির ফেন্সিডিল পানের ভিডিও।
এক কলেজ ছাত্রকে মারধোর আর নিজ সংগঠনের অন্য নেতাকর্মীদের সাথে মারপিটের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক অমির দাবি, ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে এসব অপপ্রচার চলছে।
দীর্ঘ আট বছর পর গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সাকিবুল ইসলাম রানাকে সভাপতি ও জাকির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক হয়।
আরও পড়ুন: দমনপীড়নেও আন্দোলন থামানো যাবে না: ফখরুল
কমিটি ঘোষণার পর থেকে রানার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারি, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এই ছাত্রলীগ নেতা।
এদিকে, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের ‘অপকর্ম’ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।