নগরে গ্যাস সংকটের প্রভাব পড়েছে গণপরিবহনে। গত দুইদিন ধরে চলছে না গ্যাসনির্ভর কোনো যানবাহন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। পাশাপশি বাড়তি ভাড়ায় পৌঁছাতে হচ্ছে গন্তব্যে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শনিবার (১৩ মে) রাত থেকে নগরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পাম্পগুলোতে গ্যাস না পাওয়ায় সড়কে গ্যাসনির্ভর যানবাহন কমে যায়।
সোমবার (১৫ মে) সকাল নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষারত অনেকে দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পরে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে ও বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং যেসব যানবাহন চলছে সেগুলো বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও করেন।
নগরের মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম জানান, ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও কোনো গাড়ি মিলছে না। আমি যে রুটে চলাচল করি সে রুটে গণপরিবহন বলতে গ্যাসনির্ভর যানবাহন চলে। কিন্তু এখন গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে রিকশায় যেতে হচ্ছে। এতে একদিকে সময় লাগছে এবং অন্যদিকে গাড়ি ভাড়া বেশি লাগছে।
খুলশী এলাকার বাসিন্দা তৌফিকুল আলম বলেন, বাসায় খাবারের সংকট, রাস্তায় গাড়ি সংকট। সাধারণ মানুষ যাবে কই। একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো চট্টগ্রামে এ অবস্থা হওয়ার কথা নয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতেই পারে। তাই বলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকবে না, তা হতে পারে না। এত বড় একটা শহরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকা রীতিমত অবাক করা বিষয়।
তিনি বলেন, এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম চড়া। এর মধ্যে গ্যাস সংকটে বাসায় খাবার নেই। বাড়তি টাকা দিয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। রাস্তায় নামলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কিভাবে বাঁচবে?
যানবাহন সংকটের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে ৭০ শতাংশ সিএনজি অটোরিকশা, ৪০ শতাংশ হিউম্যান হলার ও প্রায় ১৫ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এলপিজি বোতলজাত এবং অন্যান্য জ্বালানি দিয়ে চলা বিভিন্ন হাল্কা যানবাহন ও রিকশা দ্বিগুণের বেশি ভাড়া নিচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এ সংকট কমবে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামে দৈনিক ২৭৫ থেকে ৩২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে বাসা-বাড়িতে গ্যাসের চাহিদা ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। আমরা চেষ্টা করছি বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে। ইতিমধ্যে সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।