শনিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২১, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
মহানগর মহানগর

ফটিকছড়িতে বাবার মৃত্যু,সাতক্ষীরায় কোয়ারেন্টাইনে ভারতফেরত দুই ছেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : রবিবার, ২০২১ মে ০৯, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
#
বাবার মৃত্যুর পর দেশে থেকেও শেষবারের মত প্রিয় বাবার মুখখানি দেখতে পারেননি ফটিকছড়ির মো. আব্দুল মালেক ও মো. জাবেদুল ইসলাম নামের দুই ভাই। শনিবার দুপুরে হৃৎযন্ত্রের সমস্যায় বাবা জহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। কিন্তু খালাতো ভাই আব্দুর রশিদ সহ ভারত থেকে ফিরে সাতক্ষীরা সদরের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে আছেন তারা। আর এতে দাফনের আগে শেষবারের মত বাবার মুখ দেখা ও জানাযায় অংশগ্রহণের সুযোগ মেলেনি তাদের। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারতফেরত জাবেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার সমিতির হাট ইউনিয়নে। আমরা গত ২৩ মার্চ আমার এক খালাতো ভাই সহ আমার বড় ভাই আব্দুল খালেকের চিকিৎসার জন্য ভারত আসি। আমার বড় ভাই ২০১৯ সালের মার্চে কাতারে থাকা অবস্থায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন এবং প্যারালাইজড হয়ে যান। পরে তাকে দেশে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা ভারত নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে করোনা ভাইরাস ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকরা আমাদের দেশে ফেরার পরামর্শ দেন। গত ৫ মে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে আমরা দেশে ফিরি। এরপর সাতক্ষীরা শহরের সংগীতা মোড় এলাকার একটি হোটেলে আমাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কিন্তু এর মধ্যে শনিবার দুপুরে আমার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনি। অনেক চেষ্টা করেও আমরা বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি পাইনি। আমরা তিন ভাই এক বোন, আমার ছোটভাইটি কাতার প্রবাসী হওয়ায় সে হয়তো চাইলেই আসতে পারবেনা। কিন্তু আমরা দেশে থেকেও বাবাকে শেষ দেখাটুকো দেখতে পারিনি, বাবার জানাজা পড়তে পারিনি, বাবাকে মাটি দিতে পারিনি— এর চেয়ে কষ্টের আর কী থাকতে পারে পৃথিবীতে?’ বাবা জহিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানান তিনি। সমিতির হাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার দুপুর দেড়টায় জহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। দেশে থাকা তার দুই ছেলে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়ে ফেরত এসে এখন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে সাতক্ষীরায়। কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক হওয়ায় তারা বাবার জানাজায় শরিক হতে পারেননি। আমরা অনেক চেষ্টা করেও তাদের বাড়িতে আনার অনুমতি পাইনি। শনিবার রাত দশটায় নিহত জহিরুলকে জানাজা শেষে কবরস্থ করা হয়।’ জাবেদুল ইসলামের মামা নুরুল আলম মেম্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বোনের স্বামীর মৃত্যুর পর কোয়ারেন্টাইনে থাকা তার দুই ছেলেকে বাড়িতে আনার চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে তারা বাড়িতে আসার অনুমতি পায়নি বলে বাবার দাফন এবং জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। ওনি মারা যাওয়ায় পর শুরুতে দাফনের সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা দেখা দিলেও পরবর্তীতে পারিবারিক সিদ্ধান্ত রাত দশটায় জানাজা শেষে ওনাকে কবরস্থ করা হয়।’ এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video