শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
আরও আরও

ডেঙ্গু রোগীকে যেসব খাবার খাওয়ানো জরুরি

News Desk
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২১ আগস্ট ০৯, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
#
মরার উপরে খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিস্থিতি। একদিকে করোনা অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর ছোবলে শত শত মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়ছে। নবজাতকসহ যে কোন বয়সের মানুষেরই এই রোগ দেখা দিতে পারে। তাই এ সময় সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন থাকতে হবে।

ডেঙ্গু হলে শরীর সুস্থ রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। কারণ ডেঙ্গুতে শরীরের প্লাটিলেট কমে যেত শুরু করে। এ ছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বাড়তে পারে।

তাই ডেঙ্গু জ্বর হলে পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি গ্রহণ আরও বাড়াতে হবে। পুষ্টিবিদদের মতে, ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। জ্বর হলে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন।

এর থেকে হতে পারে পানিশূন্যতা। পাশাপাশি কমে যেতে পারে প্লাটিলেট সংখ্যা। তাই বাড়িতে কারও ডেঙ্গু জ্বর অবশ্যই কয়েকটি খাবার খাওয়ানো জরুরি। জেনে নিন কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন ডেঙ্গু রোগীকে-

পানি ও তরল জাতীয় খাবার
যেহেতু এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে যায়, তাই এ সময় শরীরে প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে  একজন ডেঙ্গু রোগীর দৈনিক ৩ লিটার বা ১২ গ্লাস পানির প্রয়োজন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অরুচির জন্য শরীরে পানির পরিমাণে যথেষ্ঠ ঘাটতি দেখা দেয়। তাই পানির পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের যেমনঃ আম, মাল্টা, বেদানা বা আনার, আপেল, আনারসের রস দেয়া যেতে পারে।

যেহেতু এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে যায়, তাই এ সময় শরীরে প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে  একজন ডেঙ্গু রোগীর দৈনিক ৩ লিটার বা ১২ গ্লাস পানির প্রয়োজন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অরুচির জন্য শরীরে পানির পরিমাণে যথেষ্ঠ ঘাটতি দেখা দেয়। তাই পানির পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের যেমনঃ আম, মাল্টা, বেদানা বা আনার, আপেল, আনারসের রস দেয়া যেতে পারে।

ডালিম 
ডালিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। এ সময় ডালিম খেলে বাড়বে প্লেটলেটের সংখ্যা। এই উপকারী ফলটি খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

ডাবের পানি
শারীরিক সুস্থতায় ডাবের পানি অনেক উপকারী। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা থেকে সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। তাই এ সময় বেশি করে ডাবের পানি পান করুন। এতে থাকে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।
 
ভিটামিন সি
কমলা বা মালটার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে উপকার করে। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুন কার্যকরী। এ কারণে ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন- কমলা, আনারস, স্ট্রবেরী, পেয়ারা –এসব ফল বা ফলের জুস খেতে দিন। এ ধরনের জুস ভাইরাল সংক্রমণ সারাতে সাহায্য করবে। ডেঙ্গু জ্বর সারাতে নিমপাতার রসও খুব কার্যকরী। 

কিউই ফল
কিউই ফলেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এতে থাকে পটাশিয়াম। এ ফল খেলে ইলেক্ট্রোলাইট স্তর এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেইসঙ্গে কিউই খেলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।

হলুদ
রান্নাঘরের একটি উপাদান হলো হলুদ। যা চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন। হলুদ দুধ খাওয়ার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।

মেথি
মেথি সবার ঘরেই নিশ্চয়ই আছে! ডেঙ্গু হলে অতিরিক্ত মাত্রার জ্বর কমাতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।

ব্রকোলি
ব্রকোলি হলো ভিটামিন কে’র একটি ভালো উত্স। অন্যদিকে ভিটামিন কে রক্তের প্লেটলেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। যদি কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন; তাহলে অবশ্যই তাকে ব্রকোলি খাওয়াতে হবে।

পালংশাক
পালংশাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে আইরন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করেতে সহায়তা করে এই শাক। পালংশাক গ্রহণে ডেঙ্গু রোগীর প্লেটলেট দ্রুত বাড়বে। 

পাতলা ঝোল
কোনোভাবেই এ সময় অতিরিক্ত তেল, মশলা দিয়ে রান্না করা কোন খাবার বা বাইরের কোন ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। মাছ বা মাংসের ঝোল না খেয়ে সিদ্ধ করে পাতলা ঝোল করে খেতে হবে।

স্যুপ 
বেশি মশলা দিয়ে রান্না করা গরু বা খাসির মাংসের চেয়ে ছোট মুরগীর সহজপাচ্য ঝোল বা স্যুপ বেশি উপকারী। কয়েক রকমের সবজি সিদ্ধ করে স্যুপ অথবা টমেটো স্যুপ, চিকেন স্যুপ, কর্ন স্যুপ খেলে অনেক সময় অরুচি কাটে আবার শরীরের পানির চাহিদাও পূরণ হয়।

ডেঙ্গু হলে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত

তৈলাক্ত খাবার 
এই অবস্থায় তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। তেল-জাতীয় খাবার রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বাড়ায়। তৈলাক্ত খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।

মসলাদার খাবার 
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। মসলাদার খাবার যকৃতে অ্যাসিড সৃষ্টি করে আলসার এমনকি যকৃতের দেয়ালে ক্ষয় তৈরি করতে পারে। এই ক্ষয়ের কারণে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি হ্রাস পায়।

ক্যাফিনেইটেড পানীয় 
ডেঙ্গু হলে শরীরে পানির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় কিন্তু ক্যাফিনেইটেড পানীয় মোটেও এর উপযোগী নয়। আর্দ্রতা ও আরামদায়ক এমন পানীয় পান করা উচিত। ক্যাফিনেইটেড পানীয় হৃদযন্ত্রের গতি বাড়ায়, দুর্বলতা বাড়ায় এবং পেশির ক্ষতি করে থাকে।

সবজি বিহীন খাবার 
এই সময় সবজি বহুল খাবার বাদ দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক না। তাছাড়া এই সময় শরীরে প্রচুর পানির প্রয়োজন। তাই সাধারণ পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি পান করুন।

সতর্কতা
উপরের পদ্ধতিগুলো প্রতিকারক হিসেবে নয় বরং চিকিৎসার পাশাপাশি সম্পূরক খাবার হিসেবে খাওয়া উপকারী। নিয়মিত খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে ঘরোয়াভাবে এসব খাবারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে পারেন। প্রাথমিক লক্ষণের পরেই ডেঙ্গু দ্রুত বাড়তে পারে। তবে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নেয়া উচিত

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video