শনিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২১, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
#
জাতীয় জাতীয়

অবৈধ অস্ত্র নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাফর আলমের বিরুদ্ধে।

চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে সাবেক সাংসদ জাফরের নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা ও সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২৪ ফেব্রুয়ারী ২১, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন
#

অবৈধ অস্ত্র নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাফর আলমের বিরুদ্ধে। তার নেতৃত্বে শতাধিক সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১১টা ৫০মিনিটে শহীদ মিনারটি দখলে নেন। পরে তিনি অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রাজিবকে নাজেহাল করে তার হাতে থাকা মাইক্রোফোনটি কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। এসময় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২১ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান। এরআগে থেকে সহকারি পুলিশ সুপার সহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমসহ তার ক্যাডার বাহিনী জুতা নিয়ে শহীদ বেদিতে উঠেন। ওইসময় তার ক্যাডার বাহিনী অবৈধ অস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র  প্রদর্শন করে পুরো শহীন মিনারটি দখলে নেন। একপর্যায়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রাজিফুল মোস্তফাকে গলা ধাক্কা দিয়ে হাতে থাকা মাইক্রোফোনটি কেড়ে নেন। মাইক্রোফোনটি কেড়ে নিয়ে টানা জাফর আলমের অনুগতরা শহীদ মিনারে থাকা সাংসদ সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে অকাথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকী উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী ও পৌরসভার আলমগীর চৌধুরীকেও গালিগালাজ করতে থাকে। জাফর আলমের অনুসারীরা নানা শ্লোগান দিয়ে শহীদ বেদিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। পরে তারা সঞ্চালকের মাইক্রোফোনটিও ছিড়ে নিয়ে যায়। ওইসময় শহীদ মিনার এলাকায় অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করায় সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহীদ বেদিতে ফুলদিতে আসা অনেক মানুষ বাড়ি ফিরে যায়। এ অবস্থায় সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ প্রশাসনের লোকজন পুলিশ পাহারায় রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে সেখান থেকে তারা স্ব-স্ব স্থানে ফিরে যান।

ওইসময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেন। বিপুল পরিমান পুলিশ বাহিনীর লোকজন থাকার পরও কিভাবে জাফর বাহিনীর লোকজন অবৈধ অস্ত্র নিয়ে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে যান? দ্রুত সময়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান স্থানীয় লোকজন।

এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া প্রেসক্লাবে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বির্তকিত করতে সাবেক সাংসদ জাফর আলম শহীদ বেদিতে বিশৃঙ্খলা করেন। শহীদ বেদিতে তারা দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও কালো রংয়ের গাড়িতে করে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে গেছেন। বর্তমান সাংসদ সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দিয়েছেন। প্রশাসন ও পুলিশের সামনে অস্ত্র নিয়ে শহীদ বেদিতে উঠে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। সাবেক জাফর আলমের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তার ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান জনপ্রতিনিধিরা।

এব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে সাবেক সংসদ সদস্য ও তার অনুসারীরা এধরণের আচারণ না করলেও পারতেন। শহীদ মিনারে মাইক্রোফোন কেড়ে নেয়া উচিত হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video