সারাদেশে চলমান ‘বিধিনিষেধ’ এবং স্থানীয়ভাবে লকডাউন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বাড়তে থাকা করোনার প্রকোপ রাজধানীতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে খারাপ হচ্ছে দেশের করোনা পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ঢাকায় করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এমনকি, সংক্রমণের হার বেড়ে গেলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে আবারও শোচনীয় হয়ে পড়বে সেটির ইঙ্গিত পাওয়া গেল তাদের কথায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। এর আগের দিন মারা গিয়েছিলেন ৫০ জন। একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীও বেড়েছে। একই সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৪ হাজার জন।
এক মাস আগে শনাক্তের হার সাত শতাংশে নেমে আসলেও এখন সেটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ হয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখনও ৪০ শতাংশের ওপরে। সেসব জেলায় মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। গত ১৫ দিনে শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দেড়শ’ রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। আগের ঘোষণা অনুযায়ী বিধিনিষেধ গতকাল মধ্যরাতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ চলবে।
শুধু সীমান্তবর্তী জেলাই নয়, ঢাকা ও তার আশপাশের জেলাগুলোতেও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। টাঙ্গাইলে এখন করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর হার প্রায় ৪০ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ঢাকা জেলায় চার শতাংশ থাকলেও এখন এটি প্রায় ছয় শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যতম মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঢাকা শহরে শনাক্তের হার এখনো ছয় শতাংশের নিচে আছে। কিন্তু সারাদেশে যদি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, তখন ঢাকায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাবার আশঙ্কা থেকেই যায়।’
গাণিতিক মডেল বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এরই মধ্যে ধারণা দিয়েছেন, জুলাই মাসে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পিক বা সর্বোচ্চ চূড়ায় যেতে পারে, যখন দিনে হয়তো ১০ হাজারের মতো শনাক্ত হতে পারে।
মন্তব্য করুন