রবিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২২, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
#
বিনোদন বিনোদন

আমার মৃত্যুর জন্য হিশাম দায়ী থাকবে: অভিনেত্রী তমা মির্জা

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : রবিবার, ২০২০ ডিসেম্বর ২৭, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
#
স্বামী কানাডা প্রবাসী ব্যবসায়ী হিশাম চিশতীর সঙ্গে সম্পর্কটা একদমই ভালো যাচ্ছে না জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী নায়িকা তমা মির্জার। সম্প্রতি তারা একে অপরের নামে মামলাও করেছেন। গেলো ৫ ডিসেম্বর যৌতুক, নির্যাতন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত তিন ধরনের মামলা করেছেন তমা। আর মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গত ৬ ডিসেম্বর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হিশাম চিশতী। মামলার এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ধারণা করা হয় স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হতে চলেছে এই অভিনেত্রীর। এই সম্পর্ক নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেসব প্রশ্নের জবাব দিতেই শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন তমা। প্রায় চল্লিশ মিনিটের লাইভের শেষদিকে তমা আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর তার মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন হিশাম চিশতী, সেটাও দাবি করেছেন। লাইভে তমা বলেন, কানাডার টরেন্টো শহরে প্রায় ৫০ হাজার রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী আছে। যারা বছরে দুই/তিনটি বাড়ি বিক্রি করতে পারেন। হিশামও তাদের মধ্যে একজন। তাই তাকে বিগশট যারা ভাবছেন, সে তা নয়। তারপর কথা এসেছে, তিনি কানাডাতে সাংস্কৃতিক শো স্পন্সর করেন। ২০০-৫০০ ডলার দিয়েই এসব স্পন্সর হয়। আমি আসলে তার স্পন্সরের চেয়ে তিন চারগুণ সম্মানী পাই। ‘হিশামের সঙ্গে পরিচয় আমাদের দুজনেরই এক কমন বন্ধুর মাধ্যমে। প্রথমেই তাকে আমি অত্যন্ত ভদ্র ছেলে হিসেবে জেনেছি। তার কনভেন্সিং পাওয়ার খুবই বেশি; যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে আমি তাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই।’ হিশাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপহার, কুকুরের খাবারের বিষয়ে যেসব কথা বলেছেন তা খুবই হীনমানসিকতার উল্লেখ করে তমা বলেন, স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে কে কাকে কী গিফট করছেন, তা বলাটাও খুব ছোটলোকি বিষয়। সে বলেছে আমাকে নাকি ২০ লাখ ধার দিয়েছে। এতো টাকা দিলে তো প্রমাণ থাকে, হয়তো অ্যাকাউন্টে দেবে। বা আমার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এগুলো প্রমাণ দিক। একটা প্রমাণ দিলেই হবে। সে আমাকে নাকি নিয়ে ঘুরতে গেছে! মূলত আমার সঙ্গে সে যেতো। সম্প্রতি আমি শো স্টপার হিসেবে বিদেশে গিয়েছি। আমার স্বামী ফ্রি লোডে গেছে। যা অর্গানাইজারদের কাছে খোঁজ নিলেও জানতে পারবেন। ‘সে নাকি ডিভোর্স চেয়েছে, আমি নাকি তা দিইনি। অথচ গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর আমি ডিভোর্স ফাইল করি। এটা বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে। সে কিন্তু ডিভোর্স ফাইল করেননি। আমি সেখানে উল্লেখ করেছি, কী কী কারণে আমি এটা করতে চাইছি। আমার শাশুড়ি খুব ভালো মানুষ। তিনি মারা গেছেন। কিডনি রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছিলেন, তিনি আর বেশি দিন বাঁচবেন না। তিনি চলাফেরা করতে পারতেন না। হুইলচেয়ারে করে সেই মানুষ আমার বাসা এসে বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে এটা দেখতে পারবো না যে, তমা আমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়েছে। যেহেতু আমি মৃত্যু পথযাত্রী, তমা তুমি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ডিভোর্সটা তুলে নাও।’ সবকিছু মিলিয়ে আমি ডিসেম্বরে ২৫ বা ২৬ তারিখে সেটা তুলে নিই।’ হিশাম প্রায়ই মারামারি করতেন জানিয়ে তমা বলেন, হিশামের মারামারি করার ঘটনা নতুন নয়। তার আইনজীবীর চেম্বারেও সেটা করেছেন। সেই সময়ের ভিডিও ফুটেজ আমি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জমা দিয়েছি। সে ফুটেজে স্পষ্ট আছে কীভাবে সে সিনক্রিয়েট করেছে, মারামারি করেছ। এর আগেও সে আমার গায়ে হাত তুলেছে, প্রচণ্ড মারধর করেছে। তার নামে সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। তখন আমাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। সেখান থেকে বাসায় এনে আমাকে আটকে রাখে হিশাম। এরপর যখন থানায় যাই, তখনো আমার ঠোঁট ফোলা ও মুখে মারের দাগ ছিলো। আমার মনে হয়েছে, হয়তো কমবেশি সব নারীই আক্রান্ত হন। তখন আশেপাশের অনেকেই মেয়ের দোষ খোঁজেন। ‘মামলায় সে বলেছে আমি তাকে হত্যা করতে চেয়েছি। তার বন্ধুরা আমাকে বলেছে সে জাস্ট ৫ মিনিটের জন্য আমার সাথে কথা বলতে চায়। যেদিন রাতে সে আমাদের বাসায় আসে, তার বন্ধুর ফোন, ভাইয়ের ফোনের রেকর্ডিং আমার কাছে আছে। তারা বলেছিলেন, হিশাম তোমার সঙ্গে ৫ মিনিট কথা বলতে চায়। কারণ পরের দিন আমাদের মিউচুয়াল ডিভোর্স হবে। যখন সে বাসায় আসল, তখন রাত ৩টা বাজে। এসেই সে দুর্ব্যবহার করা শুরু করে। সে আমার ফোন নিয়ে নেয়। বলে, সে আমার ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাস দেবে। সে লিখেছে, ‘আমি তমা মির্জা, আমি পরকীয়া করি। আমার স্বামী আমাকে হাতেনাতে ধরেছে’- এগুলো। ‘আমি বললাম, কী সমস্যা বলো! তার পকেটের মধ্যে ৩০-৪০টা ঘুমের ওষুধ। মদের গন্ধও আসছে। তার সঙ্গে দারোয়ান ছিলো। আমি তাকে গিয়ে বললাম, হিশামের অবস্থা তো ভালো না। বাসায় ফোন দিন। এখানে একটা কথা বলি, আমার ফোন কিন্তু তখন আমি পাইনি। সেটা পুলিশ তার পকেট থেকে উদ্ধার করে। আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশ ডেকে আনি। পুলিশ তাকে বাসা থেকে বের করতে পারেনি। তাদের সামনেই আমাদের গালিগালাজ করতে থাকে, নানাজনকে ফোন দেওয়ার কথা বলে ভয় দেখাতে থাকে।’ ‘পুলিশ তখন বলে, ম্যাডাম আপনি থানায় ডায়েরি বা মামলা করুন। তারা তখন ব্যবস্থা নেবে। হিশাম তখন আমার ঘরে গিয়ে একা একাই দরজা আটকে দেয়। আমি আমার মা-বাবাকে নিয়ে লিফটের সামনে আসি, থানায় যাবো বলে। তখন হিশাম বের হয়ে আসে। সে আমার মা-বাবার সামনে আমাকে মারধর করে। তাদের বয়স ৬৫ বছরের আশেপাশে। বাবা-মা দুজনই রোগী। তাদের সামনেই আমাকে মারতে থাকে। আমার বাবার চোখের নিচে চশমা ভেঙে ঢুকে যায়। আম্মুর কোমরে ফ্যাকচারও হয়। আমি মনে করি, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এবার তার ব্যান্ডেজ নিয়ে কথা বলি। তার হাতে ব্যান্ডেজ, কপালে ব্যান্ডেজ। সে বলেছে, আমার ৬৫ বছরের বাবা নাকি তার গলায় ফাঁস দিয়েছে। একজন গুরুতর রোগীর পক্ষে এটা আদৌ সম্ভব?।’ লাইভের শেষদিকে এ নায়িকা বলেন, এরপর যদি হিশাম আমার আর কোনো ব্যক্তিগত ছবি বা বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে বা প্রকাশ করে তাহলে আমি যদি আত্মহত্যা করি তার জন্য হিশাম দায়ী থাকবে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video