রবিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২২, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
#
মহানগর মহানগর

চট্টলবীর মহিউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২০ ডিসেম্বর ১৫, ০১:৪০ অপরাহ্ন
#
চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত মেয়র, মুক্তিযোদ্ধা এবং সুদক্ষ সংগঠক।চট্টগ্রামের স্বার্থের প্রশ্নে আপসহীন থেকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কারাবাস, উত্থান-পতন ও নানান ঘটনাপ্রবাহে চট্টলবীরে পরিণত হওয়া মহিউদ্দিন চৌধুরী ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর নগরের একটি ক্লিনিকে ইন্তেকাল করেন। আওয়ামী লীগ চট্টলবীরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মরহুমের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসি) খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, সকাল ১১টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী। এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বিকেল ৩টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির অডিটরিয়ামে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। সভাপতিত্ব করবেন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মুখ্য আলোচক থাকবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, চসিক মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। এ ছাড়া নগরের বিভিন্ন থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদসহ প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করছে। অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে খতমে কোরআন, ফাতেহা, মিলাদ, তবররক বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর রাউজানের গহিরা গ্রামে সম্ভ্রান্ত বক্স আলী চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বাবা রেল কর্মকর্তা হোসেন আহমদ চৌধুরী এবং মা বেদুরা বেগম। ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৬২ সালে এসএসসি, ১৯৬৫ সালে এইচএসসি এবং ১৯৬৭ সালে ডিগ্রি পাস করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে এবং পরে আইন কলেজে ভর্তি হলেও ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে শেষ করতে পারেননি লেখাপড়া। ১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সালে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৭১ সালে ‘জয় বাংলা’ বাহিনী গঠন করেন। সেই সময় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গ্রেফতার হন। পরে পাগলের অভিনয় করে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে উত্তর প্রদেশের তান্ডুয়া সামরিক ক্যাম্পে প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্কোয়াডের কমান্ডার নিযুক্ত হন। মহিউদ্দিন চৌধুরী যুবলীগের নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। এরপর শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে মৌলভী সৈয়দের নেতৃত্বে গঠন করেন ‘মুজিব বাহিনী’। ওই সময় ‘চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা’র আসামি করা হলে তিনি  কলকাতায় চলে যান। ১৯৭৮ সালে দেশে ফেরেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন প্রায় দুই যুগ। ২০০৬ সালের ২৭ জুন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। এ দায়িত্ব নিয়ে বহাল ছিলেন আমৃত্যু। একটানা ৩ বার প্রায় ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হয়েই বিজয়ী হন। ২০০০ সালে দ্বিতীয় দফায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০০৫ সালে তৃতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এখন দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষা উপমন্ত্রীর।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video