শুক্রবার, ২০২৫ এপ্রিল ২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
#
মহানগর মহানগর

পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২১ মার্চ ২৫, ০৫:০০ অপরাহ্ন
#
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১ টায় চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে  বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উপলক্ষে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশে পরিকল্পিত অর্থনীতির ভিত নিহিত আছে সংবিধানের ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় ৭৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক শিল্পায়নের ফলে জিডিপিতেও শিল্প খাতের অবদান ১১.৫ শতাংশ  হতে ২৯.১৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।   তিনি বলেন, বাংলাদেশ চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) কর্তৃক ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নের পর স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করেছে। তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়। বিষয়গুলো হলো- মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। ‘২০১৮ সালে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) মূল্যায়নে তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ নির্দিষ্ট মান অর্জন করেছিল। এবার ২০২১ সালের মূল্যায়নেও বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই প্রত্যাশিত মান অর্জন করে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করেছে’। জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রতিফলিত হয়েছে। বিগত একযুগ ধরে আমরা গড়ে ৭ শতাংশের ওপরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের জিডিপির আকার বর্তমানে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে সবচেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি (৫ দশমিক ২৪ শতাংশ) অর্জন করেছে। গত অর্থবছরে দেশ ১৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি সামাজিক সকল খাতে বাংলাদেশের অর্জন ঈর্ষণীয়। এমডিজির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় এসডিজি তথা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাতেও আমরা ভালো ফল লাভ করছি। তিনি বলেন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, জন্মহার, উন্নত পয়োঃনিষ্কাশন সুবিধাসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। সার্ক দেশগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র শ্রীলংকা সামাজিক সূচকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব দেশকে এই মর্যাদার আসনে আসীন করেছে। ‘পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প, এমআরটি-৬ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, রামপাল কয়লা-বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎ ইত্যাদি মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এসব প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন এগিয়ে চলছে মহাকর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে’। বিগত এক দশকে দারিদ্র্য বিমোচন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নতি লাভ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাতিসংঘের হিসেবে মাথাপিছু আয় ১২২২ মার্কিন ডলার, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ পয়েন্টের ওপরে এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ পয়েন্টের নিচে অর্জিত হলে   উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের জন্য সুপারিশ করা হয়। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ২০৬৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ মানবসম্পদ সূচকে ৭৫.৪ পয়েন্ট এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ২৫.২ পয়েন্ট অর্জন করেছে। বাংলাদেশের গৌরবময় এই অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে শনি ও রোববার (২৭ ও ২৮ মার্চ) দুইদিনব্যাপী মেলা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে অর্জিত এ অর্জন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নতুন প্রজন্মকে উৎসর্গ করেছেন। গৌরবান্বিত অর্জনটি উদযাপনে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীঃ স্বপ্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ’ শিরোনামে সকল সরকারি বেসরকারি দফতরের অংশগ্রহণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ‘বাংলাদেশের এক অনন্য অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শতাধিক সরকারি দফতর একই প্রাঙ্গণে সরকারের অর্জন প্রদর্শন করবে। এছাড়া চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে রোড শো, তথ্যচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী, কুইজ, সেমিনার, উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video