চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় টয়লেট থেকে ৭মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পরে স্ত্রীর মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে স্বামীসহ শশুর বাড়ীর সদস্যরা উধাও হয়ে গেছে।
রবিবার (১৮জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চরম্বা মাইজবিলা ৭নং ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া মেস্ত্রীর বর বাড়ীতে এঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ফরজানা ইয়াছমিন কলি (২০)। সে ওই এলাকার জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। নিহত কলি চরম্বা ১নং ওয়ার্ডের আতিয়ার পাড়ার প্রবাসী আজিজ মাস্টারের কন্যা বলে জানা গেছে।
নিহতের চাচা মতিউর রহমান জানান, বিগত আড়াই বছর পুর্বে মাইজবিলা এলাকার মৃত এনায়েত উল্লাহের ছেলে ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানের সাথে তাঁর ভাতিজি কলির বিবাহ হয়। তাঁর ভাতিজি ৭মাসের অন্তঃস্বত্বা। তাঁর ভাতিজি আহত হয়েছে বলে খবর পেয়ে তাঁরা হাসপাতালে এসেছে। হাসপাতালে এসে দেখতে পান তাঁর ভাতিজির লাশটি রেখে স্বামী সহ সবাই পালিয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন বিগত আড়াই বছর পুর্বে সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের কোন সন্তান ছিলনা। লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহতের শাশুড়ি ও সিএনজি চালক সাদেক স্থানীয়রা আটক করেন।
নিহতের মা রিজিয়া বেগম জানান, তাঁর মেয়েকে বিয়ের পর থেকে স্বামী নির্যাতন করে আসছিল।তাঁর মেয়েকে স্বামী জিয়াউর রহমান এবং তাঁর মা মিলে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নিহতের শাশুড়ি রাজিয়া বেগম জানান, ঘটনার দিন বাড়ীর টয়লেটে অজ্ঞান অবস্থায় পুত্রবধূকে দেখতে পান। সাথে সাথে চিৎকার দিলে আশপাশ লোকজন এগিয়ে এসে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেন সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু, লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকের হোসাইন মাহমুদ ও এসআই ভক্ত চন্দ্র দত্ত সহ একটি পুলিশের টিম।
হাসপাতাল ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, নিহত গৃহবধূর আত্নহত্যা নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শেখ মুহাম্মদ ফয়সাল জানান, হাসপাতালে আসার আগে গৃহবধুর মৃত্যুে হয়েছে। তবে, নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু জানান, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্নহত্যা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছেনা। নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়ি এবং পার্শ্ববর্তী একজন সিএনজি চালক থানা হেফাজতে রয়েছে।
মন্তব্য করুন