সম্প্রতি চীনে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের আসরে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সফরের মধ্য দিয়ে আরও স্পষ্ট হয় দেশ দুটির মধ্যকার দৃঢ় সম্পর্ক। চলমান ইউক্রেন সংকটের মধ্যেও আলোচনায় এসেছে চীন। কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে বেইজিংয়ের অবস্থান নিয়ে। এবার সেই কৌতূহল যেন আরও বাড়িয়ে দিল মস্কো। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য চীনের কাছে অস্ত্র চেয়েছে রাশিয়া।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে সোমবার (১৪ মার্চ) চীনের কাছে রাশিয়ার সামরিক ও আর্থিক সহায়তা চাওয়ার খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স এবং বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকেই সামরিক সরঞ্জাম এবং অন্যান্য সহায়তার জন্য চীনকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে রাশিয়া। তবে বেইজিংয়ের কাছে মস্কো ঠিক কী ধরনের সরঞ্জাম চাইছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীন রাশিয়াকে সামরিক সরঞ্জাম ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে–এমন কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মিত্র দেশগুলোকে সতর্ক করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রও।
ইউক্রেনে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। তাই অনেক মার্কিন কর্মকর্তার দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে রুশ সেনাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে।
যদিও এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি। আর ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেছেন, চীন রাশিয়াকে এ ধরনের সাহায্য করতে ইচ্ছুক–এমন কোনো বিষয়ে তিনি অবগত নন।
অন্যদিকে, রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্রবহরের সুরক্ষা নিজেরাই নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। এমনটাই দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা।
রোববার (১৩ মার্চ) এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের (ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিফেন্স কাউন্সিল) প্রধান ওলেক্সি দানিলোভ বলেন, রুশ বাহিনী যদি ইউক্রেনের পথে থাকা পশ্চিমা অস্ত্র বহরে হামলা চালায়, ওই হামলাকে জোটের সংবিধানের আর্টিকেল ৫-এর লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করবে ন্যাটো। আর্টিকেল ৫-এ ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর আত্মরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
চলমান যুদ্ধে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্রসহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দেশটির বিভিন্ন স্থানে রুশ বাহিনীর হামলা প্রতিহত করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে পশ্চিমা অস্ত্র ও অস্ত্র সরবরাহের বহরে হামলার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
মন্তব্য করুন