অনিয়ম-দুর্নীতি ধামাচাপা না দিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি প্রকাশিত : রবিবার, ২০২০ অক্টোবর ২৫, ০১:৪২ অপরাহ্ন
#
আগে যতোই দুর্নীতি, অনিয়ম হতো সেগুলো ধামাচাপা দেয়া হতো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার তা করছে না। কোথাও কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
রোববার (২৫ অক্টোবর) রিপোর্টারদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) রজতজয়ন্তীর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতির বীজ বপন করে গেছে পঁচাত্তর পরবর্তী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলো। প্রথমে জিয়াউর রহমান এরপরে এরশাদ, এরপর খালেদা জিয়া। তারা দুর্নীতিকে শুধু প্রশ্রয় দেয়া না, নিজেরাই দুর্নীতি করে গেছে এবং দুর্নীতিকে লালন-পালন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা কিন্তু সেটা কখনও করছি না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় আমাদের দেশে ছিল কী? যতই দুর্নীতি, অনিয়ম হোক, সেগুলো ধামাচাপা দেয়া হতো। আর সমস্যাগুলো ওই যে কথায় বলে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা। আমাদের সরকার কিন্তু তা করছে না।
তিনি বলেন, কোথাও কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হলে পরে আমরা কিন্তু এটা চিন্তা করি না যে এটার সঙ্গে আবার দল জড়িত কি না। আমার অমুক জড়িত কি না। পার্টির বদনাম হবে কি না। সরকারের বদনাম হবে কি না- আমরা কিন্তু সেই চিন্তা কখনও করি না। আমি চিন্তা করি, সেখানে অন্যায় হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা নিতে গিয়ে হয় এমন অনেক সময় দোষটা আমাদের ওপর চলে আসে। তখন এমন মনে হয়- আওয়ামী লীগ সরকারই যেন দুর্নীতি করছে। আসলে তা এমন নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। সমাজের দর্পণ যেটা হবে সেটা যেন অন্তত মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করে, তারা যেন মানুষের কল্যাণে উদ্বুদ্ধ হয়। তারা যেন মানুষের কল্যাণে কাজ করে।
সরকার প্রধান বলেন, সাংবাদিকদের অবশ্যই দায়িত্বশীল হতে হবে। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা এরই মধ্যে সম্প্রসারণ ও প্রচারণা আইন প্রণয়ন করেছি। আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তার বিষয়টাও দেখছি। আমরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বর্তমান সময়ে সবাই স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করতে পারছে।
ডিআরইউ'র রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডিআরইউ'র সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী।
রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ‘কর্মের গৌরবে প্রাণের সৌরভে বিপুল শক্তি একসাথে শতপ্রাণে’ স্লোগানকে সামনে রেখে চার দিনব্যাপী রজতজয়ন্তী উদযাপনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ডিআরইউ।
কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ অক্টোবর। এদিন রজতজয়ন্তীর শোভাযাত্রার পাশাপাশি আইডিইবি ভবনে ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সংকট ও সম্ভাবনা: বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক একটি স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া একই দিন ‘নারী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ’ ও ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের আইন’ শীর্ষক দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৩০ অক্টোবর আইডিইবি ভবনে। এদিন ‘রিপোর্টার্স চ্যালেঞ্জ: রিয়েল নিউজ ভার্সেস ফেক নিউজ’ শীর্ষক একটি সেমিনার ও ‘বঙ্গবন্ধু-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ‘ভিউ এক্সচেঞ্জ: রিপোর্টার্স অ্যাক্রস দ্য গ্লোব’ শীর্ষক অনলাইনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৩১ অক্টোবর। এদিন মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে ডিআরইউর সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বনাম বর্তমান কমিটির সঙ্গে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এদিনের দ্বিতীয় পর্বে সমাপনী ও সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন