অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক বদরুল আলম এ রায় দেন। এছাড়াও রায়ে ১১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, দুর্নীতিবাজদের কাছে ছেলে-মেয়ে বিয়ে নয়; সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের দাওয়াত দেবেন না, দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধান র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। ওই বছরের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ উপ-পরিচালকই মামলাটি তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পান।
বিগত ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো খেলে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো খেলে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা তিনি পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে।
সেলিম প্রধান জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এ কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এ টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা। ২০১১ সালে মুনাফা করে ১ কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮ কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এ কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন এ সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।
মন্তব্য করুন