শনিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২১, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
#
জাতীয় জাতীয়

ঠিকানাবিহীন বৃদ্ধদের আশ্রয়ের ঠিকানা বেওয়ারিশ মানবসেবা বৃদ্ধাশ্রম এর প্রতিষ্ঠাতা

মানবিক এক মানুষ মাওলানা গোলামুর রহমান রব্বানী

রতন বড়ুয়া
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২৪ ফেব্রুয়ারী ১৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
#
বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ মা-বাবাদের সেবা করছেন তাদের সন্তান গোলামুর রহমান রব্বানী

মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য । মানবতাই আসল ধর্ম । এই মানবিক কাজের জন্য যিনি বছরের পর বছর কষ্ট করে ঠিকানবিহীন রাস্তার ধারে, ফুটপাথ থেকে বৃদ্ধদের তুলে এনে নিজের প্রতিষ্ঠিত আশ্রয় ঠিকানা বেওয়ারিশ মানবসেবা বৃদ্ধাশ্রমে স্থান দিয়ে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি চিরকুমার মাওলানা গোলামুর রহমান রব্বানী । বর্তমানে চট্টগ্রাম অক্সিজেন শীতলঝর্না ৩নং রোডে এলাকায় জায়গা নিয়ে স্থায়ী একটি বেওয়ারীশ মানবসেবা বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলেছেন গোলাম রব্বানী ।  রাস্তার ধারে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ ঠিকানা বিহীন বৃদ্ধ মা-বাবাদের এনে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ কওে তোলেন। আজ এই বৃদ্ধাশ্রমে ৪০জন বৃদ্ধ মা-বাবা ও দুজান পথশিশুর অভিবাভক চিরকুমার মাওলানা গোলামুর রহমান । মূলত ওদের নিয়েই তার এখন সংসার ও জীবন ।  
২০২১ সালে মাত্র একজন রোগাগ্রস্থ বৃদ্ধকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে নিজের মাদ্রাসায় রেখে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ কওে তোলেন তিনি । পরবর্তিতে ওখান থেকে কয়েকজন অসহায় বৃদ্ধকে নিয়ে বাকলিয়া ১৮নং ওয়ার্ড কালামিঞা বাজার একটি বাসা ভাড়া কওে এই অবহেলিত বৃদ্ধদের রাখার ব্যাবস্থা করেন । কিন্ত বাসা ভাড়া দিতে না পাড়ায় ওখান থেকে চলে আসতে হয় এই মানবিক মানুষ গোলাম রব্বানীকে ।
এরপর তিনি ১৫জন বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চলে আসেন শেরশাহ্ বায়েজীদ জঙ্গল সলিমপুর । এখানে প্রায় দুবছর ভাড়া বাসায় এই বৃদ্ধাশ্রম চালান গোলাম রব্বানী ।
২০২৩ সালে প্রথম দিকে চট্টগ্রাম অক্সিজেনের শীতল ঝর্নার তিন নং রোডে  একটি জায়গায় এই মানবিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন এক আরেক মানবিক মানুষের সহযোগীতায় ।  বর্তমানে এই অসহায় বৃদ্ধদের সেবার করার জন্য ৫জন কর্মচারী ও রান্না করার একজন বাবুর্চি রয়েছেন । কেন এই বৃদ্ধাশ্রম করলেন প্রশ্ন করতেই প্রতিষ্ঠাতা গোলামুর রহমান বলেন মূলত ছোটবেলা থেকে অবহেলা ও লাঞ্চনা ও আমার মায়ের কষ্ট দেখেই আমার মনে এই অসহায় মা ও বাবাদের কিছু করার ইচ্ছা জাগে । সেই থেকেই এই মানবিক কাজে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছি ।
সংসার জীবনে নিজেকে জড়াইনি এই বৃদ্ধ মা বাবাদের অবহেলা হবে বলে , আমার জীবনে এরাই সুখ দুঃখের সাথী  ।
প্রতিমাসে তাদের কর্মচারীদের বেতনসহ এই বৃদ্ধদের জন্য প্রায় খরছ হয় তিনলক্ষ টাকা , মাঝেমধ্যে এই খরছ কম ও হয় । যদি কোন দানশীল ও সহৃদয় ব্যাক্তি চাল ডাল ও ওষুধ দেন সেসময় খরছ ও কম হয় ।
গোলাম রাব্বানী বলেন আমার এই বৃদ্ধাশ্রম এর খরছ আসে আমার দানবাক্স থেকে । আমি এই দানবাক্স নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরি  । যা পাই তা নিয়ে আমার বৃদ্ধ মা বাবাদের ডাল ভাত খাওয়াই ।
এই বৃদ্ধাশ্রমে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়ার পর সুস্থ করে তাদের পরিবারেও ফিরিয়ে দিয়েছি । এই পর্যন্ত্য এই বৃদ্ধাশ্রমে ১০জন বৃদ্ধ মারাও গেছে । তাদের ধর্মীয় বিধান মতে দাফন কার্য সম্পাদন করেছি । এই বৃদ্ধাশ্রমে দেশের বিভিন্ন জায়গার যেমন ঢাকা , কুমিল্লা, নোয়াখালী , চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলার বৃদ্ধ আছে । অনেকেই আবার নাম ও পরিচয় বলতে না পারায় তাদের একটা নাম দিয়ে এন্ট্রি করা হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রমে ।
গোলাম রব্বানী বলেন আমি ও বৃদ্ধাশ্রম চাইনা । কোন মা-বাবাকে যেন বৃদ্ধাশ্রমে আসতে না হয় এটাই আমি চাই ।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video