শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
জাতীয় জাতীয়

যুবলীগ কর্মীকে মারধরের ঘটনায় কাউন্সিলর টিনু কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২৪ মার্চ ২০, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন
#

ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে এক যুবলীগ কর্মীকে মারধরের মামলায় চট্টগ্রামের চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার এ আদেশ দেন।

ওই মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের এসআই মো. আবু তাহের জানান। গত ৪ মার্চ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় এ মামলা করেন ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান রাকিব, যিনি চকবাজার এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি করেন। টিনু ও তার দলবল ছুরি দিয়ে জখম ও মারধার করে রাকিবের টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুসহ মোট ৬ জনকে মামলায় আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- কায়সার হামিদ, সাকিবুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম রাজু, মো. আজম ও মো. শাকিল।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩ মার্চ রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পূর্ব গেইট সংলগ্ন একুশে ড্রাগ হাউস নামের একটি ওষুধের দোকানে ছিলেন রাকিব। সেখানে থাকা রাকিবের বন্ধু অভিজিৎ সেন মিশুর মোবাইলে ফোন করে রাকিবের সাথে কথা বলেন কাউন্সিলর টিনু। পূর্ব বিরোধের জের ধরে টিনু আমাকে টেলিফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকে। আমার অপরাধ কী জিজ্ঞেস করলে তখন আমাকে সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে তুলে নেওয়ার এবং মামলা দিয়ে লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে টিনুর নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা আরো ১০-১৫ জন লোক নিয়ে এসে ওই ওষুধের দোকানে প্রবেশ করে।

ওই সময় তারা ছোরা হাতে দোকানে ঢুকে অমাকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে কায়সার হামিদ ছোরা দিয়ে আমার বাম হাতের কবজির উপর জখম করে। আরেক আসামি সাকিবুল ইসলাম আমার প্যান্টের পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। রাকিব বলেন, এরপর আসামিরা জোর করে টেনেহিঁচড়ে মোটর সাইকেলে বসিয়ে আমাকে চকবাজার ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে আসামি মো. আজম ও মো. শাকিল চড়-থাপ্পড় মেরে চোখ মুখে জখম করে। এক পর্যায়ে আসামি নূর মোস্তফা টিনু এই ঘটনা কাউকে বললে আমাকে জানে মেরে ফেলবে এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে বলে হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়রা রাকিবকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরদিন পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন রাকিব।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন রাকিবের রাজনৈতিক সহকর্মী ও অনুসারীরা পাঁচলাইশ থানার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করলে তাতেও হামলা হয়। হামলায় কয়েকজন আহত হন। ওই হামলার জন্যও কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুকে দায়ী করেন রাকিব।

তিনি নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য নূরুল আজিম রনির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

চকবাজারের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাতে র্যাবের হাতে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সেসময় তিনি চট্টগ্রামের রাজনীতিতে সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

তখন র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে টিনুর বিরুদ্ধে।

সে মামলায় টিনুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। পরে জামিনে বের হলেও ২০২১ বছরের জুন মাসে আদালতের আদেশে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর ২০২১ সালের মার্চে চকবাজার ওয়ার্ডের সাতবারের কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়াদার মিন্টু মারা গেলে ওই বছরের অক্টোবরে উপ-নির্বাচনে কারাগারে থাকা অবস্থায় মাত্র ৭৮৯ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন টিনু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছিলেন ৭৭৩ ভোট।

কাউন্সিলর টিনু বর্তমানে নিজেকে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video