বুধবার, ২০২৫ এপ্রিল ৩০, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
#
জাতীয় জাতীয়

সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২২ ডিসেম্বর ২৬, ০১:২৭ অপরাহ্ন
#
ছবি: ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের’ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি: ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের’ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাদেশি-বিদেশি সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন সরকার সব করেছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার করা হবে না বলে আইন করা হয়েছিল। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স আইন বাতিল করে জাতির পিতার পরিবারের হত্যার বিচারের কাজ শুরু করি। সে সময় আমাদের অনেক বাধা আসে। কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করে ২০০৯ সালে বিচারক তোফাজ্জেল সাহেব রায় কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলেই আমরা বিচার করতে পেরেছি।’

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলাম তখন অনেক বাধা সৃষ্টি হয়। দেশের বাইরের রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই বিচারের অনেক বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি কেউ কেউ আমার কাছে টেলিফোন করে কথাও বলেন। তাদের শুধু আমি একটি কথা বলেছিলাম, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যারা অপরাধ করেছিল তাদের বিচার তো এখনও হচ্ছে তাহলে বাংলাদেশের মানুষের ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছে, হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে না কেন? এ ধরনের চাপ আমাদের ওপর হয়েছিল তারপরও আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি।’

আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায়, জানালেন কাদের

বিভার বিভাগে প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা যেমন প্রযুক্তির ব্যবহার করে সুযোগ পাচ্ছি তেমনি এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কার্যকর্মের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। এজন্য আমরা আইন করছি, এর বিরুদ্ধে অনেকে অনেক কথা বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটা আমাদের একান্ত প্রয়োজন এ কারণেই এখন কিন্তু আগের মতো মল্লযুদ্ধ হয় না এখন বোতাম টিপে হয়, এমনকি এখন অনলাইনে ট্রেনিং দেয়া হয় কীভাবে বোমা বানাবে, কীভাবে মানুষ খুন করবে। কাজেই সব ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী আইনগুলোকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।’

ভার্চুয়াল আদালত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়াল কোর্ট প্রতিষ্ঠা করে বিচার যাতে চলে সেই ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করি। এরপর ভার্চুয়াল আদালত প্রতিষ্ঠার পরে অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের আইনজীবী যারা তাদের জন্যও সুবিধা হয়েছে যে, যেকোনো জায়গা থেকেই আদালত পরিচালনা করতে পারছেন। সারা দেশে ই-জুডিশিয়াল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ই-জুডিশিয়ালি চালু করা গেলে মামলা ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে।’

বিচারকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিচারকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা আমরা করে দেব। ইতোমধ্যে জায়গা দেখা হয়েছে সেটা কার্যকর কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আমরা একটা আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। বিচারকদের বাসস্থানের জন্য আমরা ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। এটা শুধু ঢাকা শহরে না প্রতিটি জেলায় আমরা নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেব। সেইসঙ্গে বিচারকদের গাড়ি ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য গাড়ি ঋণ নগদায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব মানুষ যেন ন্যায় বিচার পায়, মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় এবং একটা স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয় সেই পরিবেশটা আমরা চাই।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video