রবিবার, ২০২৫ মে ০৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩২
#
মহানগর মহানগর

ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন চন্দনপুরা হামিদিয়া তাজ মসজিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২২ ফেব্রুয়ারী ১৭, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
#

মসজিদের চারদিকে যেন মেলা বসেছে রঙের। সুউচ্চ মিনার, দেয়াল, দরজা-জানালা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই রং-বেরঙের অসাধারণ কারুকাজ। এই কারুকাজ দেখেই অনুমান করা যায় এ মসজিদে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনুকরণে তৈরী করা হয়েছে।

বলছিলাম বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অনন্য নিদর্শন ঐতিহ্যবাহী চন্দনপুরা হামিদিয়া তাজ মসজিদের কথা। মসজিদ-ই-সিরাজউদ্দৌলা নামে পরিচিত হলেও বেশিরভাগ মানুষ ডাকে চন্দনপুরা মসজিদ নামে।

বন্দরনগরীর চকবাজার ওয়ার্ডের নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে রয়েছে এই মসজিদটি। ১৯৫০ সালে এটি নির্মাণ করেন আবু সৈয়দ দোভাষ। ১৮৭০ সালে সেখানে মাটি ও চুন সুরকির দেয়াল আর টিনের ছাদের একটি মসজিদ ছিল। ওটা প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ দোভাষের পূর্বসুরী আব্দুল হামিদ মাস্টার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮৭০ সালেও মাটির দেয়াল কারুকাজে ভরপুর ছিল। হামিদ মাস্টারের বংশধর ব্রিটিশ সরকারের ঠিকাদার আবু সৈয়দ দোভাষ ১৯৪৬ সালে এই মসজিদ সংস্কারে হাত দেন। সেই সময় কলকাতা থেকে কারিগর ও দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে উপকরণ এনে প্রায় ১৩ শতক জায়গার ওপর দোতলা মসজিদটি গড়ে তোলেন তিনি।

মসজিদটির নান্দনিকতা বাড়াতে নির্মাণ করা হয় ছোট-বড় ১৫টি গম্বুজ। প্রতিটি গম্বুজে যাওয়ার জন্য আছে সিঁড়ি। গম্বুজ ও সিঁড়িতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মোগল স্থাপত্য নিদর্শনের প্রতিচ্ছবি। গম্বুজের চারপাশে রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়া ১০ সাহাবির নাম। যখন মাইকের ব্যবহার ছিল না, তখন চারতলা সমান উঁচু মিনারে উঠে আজান দেওয়া হতো। এ রকম দু’টি মিনার এখনও আছে। বর্তমানে প্রতি পাঁচ বছর পর একবার রং করা হয়। এ মসজিদে বড় গম্বুজটি ছিল প্রায় ১৩ মণ রুপা ও পিতলের তৈরি। বৈরী আবহাওয়ায় এসব জিনিস যেমন নষ্ট হয়েছে তেমনি সংস্কারের সময়ও অনেক কিছু হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে বড় গম্বুজে সবুজ, গোলাপি ও হলুদ রং করে দেওয়া হয়।

মসজিদের চারপাশের দেয়ালগুলো ভেন্টিলেশন সিস্টেমের। দেয়ালের ফাঁক গলে ঢুকছে আলো-বাতাস। প্রাকৃতিক আলোর ঝরনায় ভেতরটা ঝলমল করে। আছে বাতাসের কোমল পরশ।

বর্তমানে মসজিদে একজন ইমাম, একজন হাফেজ ও দু’জন মুয়াজ্জিন রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনই নতুন নতুন মুসল্লিরা এ মসজিদ দেখতে আসেন। আশপাশেও অনেক নতুন মসজিদ গড়ে উঠেছে। এরপরও এ মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছে। সাধারণত দিনে গড়ে ৮০০ থেকে ৯০০ লোক নামাজ পড়েন এ মসজিদে। শুক্রবার জুমায় পাঁচ হাজার মুসল্লি ছাড়িয়ে যায়। তখন মসজিদে জায়গা সংকুলান না হলে মসজিদসংলগ্ন রাস্তা বন্ধ করে সেখানেই নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

মসজিদটিতে আরো রয়েছে দুর্লভ ইসলামী নিদর্শনাবলির সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video