রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্মসনদ, জাতীয়তা সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান এবং পাসপোর্ট আবেদন করতে সহায়তা করার দায়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই মামলায় ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. নুরুল ইসলাম, জন্ম নিবন্ধন প্রস্তুতকারী মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন এবং হাটহাজারী ও চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের চার কর্মচারী এবং চার রোহিঙ্গাসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের চার আসামি হলেন- মো. জয়নাল আবেদীন, মো. নুর আহম্মদ, মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী ও সত্য সুন্দর দে।
চার রোহিঙ্গা আসামি হলেন- মো. আবদুস ছালাম, মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, লাকি (প্রকৃত নাম রমজান বিবি) এবং নজির আহমদ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামি মো. আবদুস ছালাম একজন রোহিঙ্গা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। তিনি আগে থেকে বাংলাদেশের আইডি কার্ড, জাতীয়তা সনদ তৈরি করেছেন। নিজে এসব সনদ জোগাড় করার পর তিনি টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশের নাগরিক বানানোর জন্য দালালিতে নেমেছেন।
আবদুস ছালাম ২০১৯ সালে মির্জাপুর ইউনিয়ন থেকে রমজান বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজের মৃত মেয়ে লাকির নাম ব্যবহার করে আইডি কার্ড তৈরি করে দেন। এছাড়াও রমজান বিবির দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও জান্নাতুল বাকির নামে জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ তৈরি করে দেন। এরপর তিনজনের পাসপোর্ট ফরম পূরণ করে আবেদন জমা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
সবকিছু জেনেও টাকার বিনিময়ে আবদুস ছালামকে এসব কাজে সহায়তা করেন তার ছেলে মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, জন্ম নিবন্ধন প্রস্তুতকারী বেলাল উদ্দিন। সৌদি আরবে প্রবাসে থেকে রমজান বিবিকে এসব কাজে নির্দেশনা দেন তার স্বামী ও রোহিঙ্গা নাগরিক নজির আহমদ।
এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা নাগরিক রমজান বিবি ও তার দুই মেয়েকে পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার দায়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন- হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, মেম্বার ও জন্ম নিবন্ধন প্রস্তুতকারী। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম ও হাটহাজারী নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের চার কর্মচারীকে এবং চারজন রোহিঙ্গা নাগরিককে।’ আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ কাজ করে লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন