চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা গানটির মতোই আপনার অবস্থা হবে যদি আপনি পরিচিত মানুষ কিংবা অপরিচিত মানুষকে একবার দেখেই চিনতে না পারেন। এটি কিন্তু একটি জটিল রোগ। এই রোগের নাম প্রসোপ্যাগনোশিয়া।
এই রোগের শিকার যে কোনো বয়সেই আপনি হতে পারেন। রোগে আক্রান্ত হলে এর লক্ষণ হিসেবে আপনি পরিচিত মানুষের চেহারা ভুলে যাবেন। অপরিচিত চেহারা একবার দেখেই পরক্ষণেই আর মনে করতে পারবেন না আপনি। তাই প্রসোপ্যাগনোশিয়াকে ফেস ব্লাইন্ডনেসও বলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মস্তিষ্কের সমস্যার কারণেই এই রোগ হতে পারে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তি মুখ দেখে না চিনতে পারলেও গলার আওয়াজ শুনে, স্পর্শ করে, পোশাক দেখে বা আরও অন্য কোনো উপায়ে চিনতে পারেন পরিচিত মানুষটিকে।
অনেকেই এই রোগটির সঙ্গে চোকের সমস্যা, বয়স বাড়া বা ডিমেনশিয়াকে দায়ী করে থাকেন যা একটি ভুল ধারণা। মূলত এই রোগটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো অ্যাকোয়ার্ড এবং অন্যটি কনজেনিটাল।
ব্রেন স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার, দুর্ঘটনার জন্য মাথায় চোট, ট্রমা, অ্যালঝাইমার্স, এনকেফালাইটিস ইত্যাদির জন্য অ্যাসোসিয়েশন কর্টেক্স বিকল হয়ে প্রসোপ্যাগনোশিয়া হলে তাকে চিকিৎসাশাস্ত্রে অ্যাকোয়ার্ড প্রসোপ্যাগনোশিয়া বলে।
অন্যদিকে কনজেনিটাল প্রসোপ্যাগনোশিয়ায় জন্ম থেকেই অ্যাসোসিয়েশন কর্টেক্স কাজ করে না। ফলে মুখ দেখে চেনার কর্মকাণ্ড মস্তিষ্ক পরিচালনা করতে পারে না কখনোই।
এ বিষয়ে ভারতের নিউরোলজিস্ট ডা. জয়ন্ত রায় মনে করেন, মস্তিষ্কের অ্যাসোসিয়েশন কর্টেক্সে ইনফরমেশন প্রসেসিং দুর্বল হলে এই রোগে আক্রান্ত হতে হয়। স্ক্যানিং, এমআরআই ইত্যাদি নানা পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা যায়।
এই রোগের কোনো ওষুধ নেই। আরোগ্য লাভ করতে রোগীকে জীবনযাপনে বেশ পরিবর্তন আনতে হয়। প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমেও এই রোগ থেকে অনেকটাই মুক্তি লাভ করা যায়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
মন্তব্য করুন