বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ৫ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ৩ ম্যাচে মোট ৭টি ছয় মেরেছিলেন সফরকারীরা। অথচ, চতুর্থ ম্যাচে শনিবার (৭ আগস্ট) ১ ওভারেই ৫ ছক্কা মারলেন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। সেটাও আবার সাকিব আল হাসানের মতো স্পিনারের ওভারে।
আগের ম্যাচে শুক্রবার (৬ আগস্ট) মাত্র ১২৭ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। মুস্তাফিজুর রহমানের ৪ বলের একটিও ব্যাটে লাগাতে পারেননি ক্রিস্টিয়ান। তার ডট বলগুলোতেই মূলত সিরিজ থেকে ছিটকে যায় অতিথিরা।
শেষ পর্যন্ত সে ম্যাচ ১০ রানে জিতে সিরিজ জিতে নেন টাইগাররা। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই ক্রিস্টিয়ানই দলকে জিতিয়ে দিলেন। ৬, ৬, ৬, ০, ৬, ৬! সাকিবের বলে মিরপুরে ঝড় তুলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। লং অন, ওয়াইড লং অন, মিডউইকেট, মিডউইকেট, লং অন- এ অঞ্চল দিয়ে পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন ক্রিস্টিয়ান। এদিন সাকিব ওই পাঁচটি বাদেও আরও একটি ছয় মেরেছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ম্যাচটিতে কী ছিল এমন ম্যাজিক!
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড বলেছেন, খেলার পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সাকিবের ওই ওভারটি। এ বিষয়ে ক্রিস্টিয়ান বলেন, সাকিবের ওপর আক্রমণের আলাদা পরিকল্পনা ছিল। পরের ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করতেই এমন ব্যাটিং করেছি।
তবে ক্রিস্টিয়ান জানালেন, সে ওভারে ভাগ্যকে পাশে পেয়েছেন তিনি। বলেন, আমার মনে হয় ভাগ্য ভালো যে কয়েকটা বল ব্যাটের মাঝে লেগে গেছে, পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং করার সৌন্দর্য এটাই। বৃত্তের বাইরে যখন দু’জন ফিল্ডার থাকেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে এমন কঠিন কন্ডিশন আর কোনোটির সঙ্গেই তুলনা করা যাবে না। যত কঠিন কন্ডিশন দেখেছি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য বাংলাদেশ ওপরের দিকেই থাকবে। ১২০ রান এখানে ১৯০-এর মতো। স্পিনাররা বোলিংয়ে এলে, পেসাররা স্লোয়ার করা শুরু করলেই খেলা কঠিন হয়ে যায়। বল থেমে আসে, টার্ন করে। তার ওপর বিশাল মাঠ। একেবারেই ভিন্ন রকম ক্রিকেট।’
তবে ভিন্ন রকম ক্রিকেট হলেও টি-টোয়েন্টির ‘মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ বলেই মনে করেন ক্রিস্টিয়ান। বলেন, ‘রোমাঞ্চকর তো অবশ্যই। তবে টি-টোয়েন্টি তো এমন কিছুর জন্য আবিষ্কার হয়নি। টি-টোয়েন্টি এসেছে চার-ছক্কা আর অনেক রানের জন্য। এখানে এমন হয়নি। তবে ক্রিকেটীয় দিক দিয়ে চমকপ্রদ ছিল। প্রতি বলই এখানে গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি বাউন্ডারিরই মূল্য আছে।’
এ ম্যাচে ৩ উইকেটে হারলেও ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ৩টি জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সোমবার (৯ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলার শুরুতে ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। পরের সিরিজ জিততে টাইগারদের অপেক্ষা করতে হয় ৫ বছর। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হারায় সাকিব-তামিমরা। পরের বছরই প্রথম কোনো দলকে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা।
একটু বিরতি দিয়ে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৮ সালে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১ ব্যবধানে হারায় মুশফিকরা। সবশেষ ২০২০ ও ২০২১ এ জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন