শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
চন্দনাইশ চন্দনাইশ

চন্দনাইশে জমির টপ সয়েল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইট আইনের কারাদন্ডের বিধান প্রয়োগ না থাকায় বন্ধ হচ্ছে না মাটি কাটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২৪ মার্চ ২০, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
#

চন্দনাইশ উপজেলায় অবৈধ ইট ভাটাগুলোতে আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইট। পাশাপাশি বাড়ী-ভিটা তৈরি করতে রাতে আঁধারে নিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমির টপসয়েল।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও কোনোভাবে থামছে ধানি জমির টপসয়েল কাটা। রাতের আধাঁরে মাটি দস্যুরা ডাম্পারে করে সারারাত ব্যাপি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ধানি জমির টপসয়েল কেটে পুকুরে পরিণত করছে । ফলে চন্দনাইশে দিন দিন ধানি জমি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দুই জনই মহিলা হওয়ায় মাটি দস্যুরা মাটি কাটার বেঁচে নিয়েছে রাতকে।

এই বিষয়ে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ডিপ্লোমেসি চাকমা বলেছেন, অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে। যেহেতু এই মাটি দস্যুরা রাতের একই সময়ে  এই কার্যক্রম বিভিন্ন জায়গায়  চালিয়ে যাচ্ছেন  ফলে সব জায়গায় এক সাথে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এই ধরনের অপরাধের জন্য কৃষি জমির পরিমাণ যেমন কমছে, তেমনি মাটির উর্বরতা শক্তিও নষ্ট হচ্ছে। ফসলি জমির উপরি ভাগের মাটি কাটা বন্ধ না করলে ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩-এর মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণে ৫ এর (১) ধারায় উল্লেখ রয়েছে। কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি, পাহাড় বা টিলার মাটি কেটে সংগ্রহ করে তা ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, যিনি এই আইনের ৫ ধারা লঙ্ঘন করবেন, তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। কিন্তু সারা দেশে এই আইনের কারাদণ্ডের বিধান যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় ইটভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীরা ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কাটা বন্ধ করছে না।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, প্রতিদিন রাত ১০ টা থেকে ভোর পর্যন্ত শত শত ট্রাকে মাটি ভর্তি করে ইটভাটা ও বাড়ী-ভিটা ভরাট করা হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে আগামী কিছুদিনের মধ্যে চন্দনাইশের চাষাবাদ ব্যাহত হবে। বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা প্রসাশনকে মোবাইলে অবহিত করেও কোনো ধরনের প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। যেহেতু রাতের বেলা মাটি কাটা হয় সেহেতু রাতের আধারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, একবার ধানি জমি থেকে টপসয়েল কেটে নিয়ে গেলে ১৫ বছর পর্যন্ত জমির উর্বরতা ফিরে আসে না। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশে এইভাবে ধানি জমি উর্বরতা হারাতে থাকলে ফসল উৎপাদনে ঘাটতি আসবে। বিষয়টি অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video