শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
চন্দনাইশ চন্দনাইশ

হরিজন সম্প্রদায়ের প্রথম আইনজীবী কৃষ্ণ, গাউন পরিয়ে দিলেন জেলা জজ,সংবর্ধনা দিলেন জেলা পি.পি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চন্দনাইশ
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২৪ মার্চ ১৯, ০২:২২ অপরাহ্ন
#

দেশের প্রথম হরিজন সম্প্রদায় থেকে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় কৃষ্ণ দাসকে গাউন পরিয়ে দিলেন চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া।

গত ১৪ মার্চ বিকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের জেলা ও দায়রা জজ আদালত মিলনায়তনে জেলা পি.পি এড. ইফতেখার সাইমুন চৌধুরী ব্যবস্থপনায় তাঁর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া। অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি আজহারুল হকের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রথম যুগ্ম জেলা জজ খাইরুল আমিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এড. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ ।

প্রধান অতিথি বলেন, 'পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর হয়েও কৃষ্ণ দাশ যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, তা নিঃসন্দেহেপ প্রশংসার দাবিদার। তার এই একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রম সফলতা এনে দিয়েছে। কৃষ্ণ দাশের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের। মানুষের মধ্যে কোনও প্রকার ভেদাভেদ, উঁচু-নিচু জাত বলতে বিভাজন করা কারও কাজ নয়। প্রত্যেক মানুষ সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে পৃথিবীতে আসেন। তিনি যাকে যে পরিবার, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ে পাঠান সেখানেই লালিত-পালিত হন। আমরা জন্মসূত্রে মুসলিম, অন্যজন জন্মসূত্রে হরিজন, পার্থক্য এইটুকু।'

কৃষ্ণ দাশের মা-বাবা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সেবক)। ছোটবেলা থেকে মা-বাবার সঙ্গে তিনি ওই কাজে জড়িয়ে পড়েন। তবে এর পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যান। সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর সহায়তায় চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে ২০১৮ সালে এলএলবি (সম্মান) পাস করেন। চলতি বছর ৯ মার্চ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এলএলবি পাশ করার পর কৃষ্ণ দাশ এড. ইফতেখার সাইমুলের সহকারী হিসেবে জেলা জজ আদালতে কার্যক্রম শুরু করে।

ফলে অনেক প্রতিকুলতা ও সংগ্রাম করে আইনজীবী হলেন হরিজন সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ দাশ। দেশের ১৫ লাখ হরিজন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও আইনজীবী হিসেবে আইন অঙ্গনে পা রাখলেন তিনি। বহুদিনের স্বপ্ন সফল হওয়ায় উচ্চসিত এই তরুণ। তার পিতা চিরনজিৎ দাশ ও মাতা ছায়া দাশ ২ জনই সিটি কপোর্রেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মী। এইটাকে এক মাইল ফলক বলেছেন বিচারক ও সিনিয়র আইনজীবীরা। যেখানে প্রাথমিক পযার্য় শেষ করে জড়িয়ে পড়ে তাদের পেশায়, সেখানে কৃষ্ণ যেন অদম্য এক যোদ্ধা। কেননা অবহেলিত একটি সম্প্রদায়ের এই তরুণ যেভাবে উঠে এসেছেন যেন এক অনন্য উদাহারণ। কৃষ্ণ দাশ সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত মহিউদ্দীন চৌধুরী বিনা বেতনে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। পূর্ণতা পেয়েছে শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর কাছে। কৃষ্ণ দাশ আইন পেশায় এগিয়ে যেতে হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video