নোয়াখালীর চাটখিলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আটক মো. সোহেলকে (৩৫) কান ধরে ওঠবস করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সালিশের রায় মেনে নিতে মেয়ের বাবার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষরও নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সালিশ বৈঠক বসে। এতে নেতৃত্ব দেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল।
স্থানীয়রা জানান, গত রোববার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় জনতা বাজার থেকে তার ভাই একই বাড়ির চাচা সম্পর্কিত মো. সোহেলের (৩৫) সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীকে বাড়ি পাঠায়। এসময় সোহেল তাকে সোজাপথে না নিয়ে নির্জনস্থানে পরনের কাপড় খুলে কয়েকবার ধর্ষণচেষ্টা করেন। পরে তার চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে এলে সোহেল পালিয়ে যান। তিনি মোহাম্মদপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুস্তম পাটোয়ারীর ছেলে।
সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুলের নেতৃত্বে মেয়েদের বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। এতে অভিযুক্ত সোহেল, তার বাবা রুস্তম পাটোয়ারী, মামা স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী বেলাল, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সমাজপতি আবুল কাশেম পাটোয়ারী, আজিম মিয়াজীসহ এলাকার কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত মো. সোহেলকে ‘উপযুক্ত শাস্তি’ হিসেবে ১০ বার কান ধরে ওঠবস করার সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া মেয়ের মা-বাবার পায়ে ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করে। এসময় সালিশের রায় মেনে নিতে সাদা স্ট্যাম্প উভয় পক্ষের সাক্ষরও নেওয়া হয়।
নির্যাতিতার কৃষক বাবা বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ঘটনার পর থানায় মামলা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আসামি আওয়ামী লীগ নেতার ভাগনে। তাই স্থানীয় সমাজপতিরা বিচারের আশ্বাস দিয়ে সালিশের আয়োজন করে। তাদের বাহিরে কিছু করলে এলাকায় থাকতে দিবে না।
ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল সালিশ বৈঠকে কথা স্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষের সম্মতিতে সালিশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সবার সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত সোহেলকে কান ধরে ওঠবস করার সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতের জন্য স্ট্যাম্পে সাক্ষরও রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাটখিল থানার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু জাফর বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।
মন্তব্য করুন