বৃহস্পতিবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৯, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
#
জেলা-উপজেলা জেলা-উপজেলা

পাষন্ড সন্তানেরা বৃদ্ধ মাকে গভীর রাতে রাস্তায় ফেলে দেয়,হাসপাতালে মৃত্যু


প্রকাশিত : সোমবার, ২০২৪ ফেব্রুয়ারী ২৬, ০৯:২৭ অপরাহ্ন
#

২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার দিবাগত রাতে অতিবাহিত হয়েছে ইসলাম ধর্মের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রজনী মহিমান্বিত রজনী শবে বরাত।
যে রাতে মুসলিমরা জান্নাত খুঁজতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদে মশগুল সব মায়ের সন্তানরা। মসজিদে মসজিদে চলছে তখন প্রার্থনা ।  ঠিক একই সময়ে মুমুর্ষ বৃদ্ধ  এক মা পড়েছিল রাস্তায় । আমরা কোন সমাজে বাস করছি, দিন দিন আমাদের মানবিকতা কোথায় গিয়ে দাড়াচ্ছে সেটা ভাববার বিষয় । যে মায়ের বুকে সন্তান দশমাস দশদিন নিরাপদ তো থাকেই , জম্মদানের পরও সন্তানের জন্য মায়ের যে ত্যাগ তা কি এই অধম অকৃতজ্ঞ সন্তানরা বুঝেনি । কি বিধির বিধান সেই মা মৃত্যুর পূর্বমুহুর্তেও বলছেন তোরা কই
কিছু মানবিক মানুষ এই বৃদ্ধ অসহায় মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। সেখানেই রাত আড়াইটার দিকে মারা গেছেন এই দুঃখী মা জননী।
হাসপাতালে নেওয়ার পর ওই মা জননীর আর্তনাদ ছিল-‘তোরা কোথায়, আমাকে কেন ফেলে গেলি, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যা’। মায়ের এমন আত্ম চিৎকারে আকাশ বাতাস চারদিকে বিষন্ন হয়ে উঠে। হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরাও দুই চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। এমন নিষ্ঠুর সন্তানদের আচরণে মা একটুও তাদের প্রতি অভিশাপ দেয়নি। শুধু একটা আকুতি ছিল তোরা আমাকে কেন ফেলে চলে গেলি আমাকে নিয়ে যান। বৃদ্ধ মা মায়ের এমন কথায় উপস্থিত সবার মধ্যে কলিজায় দাগ লেগে যায়।
ফেসবুকে সবাই লিখেছেন, যখন দুনিয়ার মানুষ জান্নাত খুঁজতে ব্যাস্ত তখন কিছু মানুষ জান্নাতকে ফেলে দিয়ে গেছে রাস্তায়!
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত্য ওই দুঃখী মায়ের লাশ পড়েছিলো কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু মিলেনি কোনো পরিচয়। খবর নিতে আসেনি কোনো আত্মীয়-স্বজন। তাই বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে সনাক্ত করা হয়েছে। তবে পরিচয় উদ্ধারে চেষ্টা করছে পুলিশ।
রাতেই এই অশীতিপর বৃদ্ধাকে রাস্তা থেকে উদ্ধারের ঘটনা ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সর্বমহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সবাই ব্যাপক আফসোস করছেন।
এ বিষয়ে বড় বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কামাল উদ্দিন বলেন, “এখন ৮০ ভাগ নিশ্চিত সন্তানরাই এই মাকে  নিষ্ঠুরভাবে ফেলে গেছেন। তা যদি হয়ে থাকে তাহলে সেই সন্তানদের পরকাল কেমন হবে? মাকে নিয়ে কেন এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা? এটা কি ধর্মীয় বা নৈতিক স্খলন? এটা সমাজে কি বার্তা দেয়।”  
মা-বাবাই মানুষের জন্য আল্লাহর দেয়া বড় নেয়ামত। তাদের সেবাতে নিহিত রয়েছে জান্নাত। তাহলে এমন ঘটনাগুলো কেন ঘটে? এমন অকৃতজ্ঞ কুলাঙ্গার , অজ্ঞানী সন্তানদের ও  কি বৃদ্ধকালে এমন পরিণতি হবে?
তাই সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে । বর্তমানে যে হারে বৃদ্ধাশ্রম হচ্ছে, যেভাবে বৃদ্ধ মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে হচ্ছে এটা শুভ লক্ষন নয় । কোন মায়ের সন্তান বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছেন আবার কোননা কোন সন্তান সেই বৃদ্ধাশ্রম বানিয়ে বাবা মায়ের সেবা করছেন । কে সেবা করার কথা আর কে করছেন সেবা । এধরনের ঘটনায় সাধারন মানুষের মাঝে উদ্বেগ ও উৎক›ঠার সৃস্টি হয়েছে  । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা দেখার পর বিশেষ করে মা-বাবাদের মাঝে একধরনের চাপা অভিমান ও ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে ।
কি হবে এমন সন্তান জম্ম দিয়ে ,যে সন্তানদের কষ্ট করে মানুষ করেও, মুমুর্ষ ও বৃদ্ধ কালে রাতের অন্ধকাওে রাস্তায় ফেলে রেখে সন্তানরা চলে যাবে । আজ চিন্তা করার সময় এসেছে । যারা সমাজ ও মানবতা নিয়ে কাজ করছেন তাদেও এব্যাপারে কিছু করার সময় এসেছে মনে করছেন অনেকে । এটা নতুন কোন ঘটনা নয় । এর আগেও অনেক অকৃতজ্ঞ সন্তান এভাবেই মমতাময়ী মা ও বাবাদের রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে গেছেন । হয়ত কেউ বেঁচে গেলেও বেশির ভাগের হয়েছে মৃত্যু না হয় জায়গা হয়েছে কোন বৃদ্ধাশ্রমে ।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video