শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
#
জেলা-উপজেলা জেলা-উপজেলা

রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭টি ঘর

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২১ জুলাই ১৩, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন
#

 সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের তৈইলকুপি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭টি ঘর রাতের আঁধারে ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

গত ৪ জুলাই উপজেলার তৈইলকুপি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৩ টি ঘরের মধ্যে ৭টি পরিপূর্ণ পাকা নির্মাণ ঘর স্কেভেটার দিয়ে তড়িঘড়ি করে গুড়িয়ে মাটির সাথে মিশে ফেলা হয়। এলাকাবাসীর বুঝে উঠার আগেই কলারোয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ চৌধুরী ঘরগুলো লোকবল দিয়ে সরিয়ে ফেলেন। বাকি ৬টি ঘর ছাড়া সেখানে এখন ফাঁকা মাটি পড়ে আছে। তবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিল্ডিংয়ের পলেসতারা। বাকি ৬টি ঘর মাটি ধসে যাতে পার্শ্ববর্তী পুকুরে না পড়ে সে জন্য বাঁশ খুঁটি পুতে পাইলিং এর কাজ শুরু করেছে।
এদিকে রাতারাতি ঘর উধাও হবার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী ও গ্রামের উৎসুখ মানুষ দেখার জন্য সেখানে ভিড় করছেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক বিচারের দাবি জানিয়েছেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন।  

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তৈইলকুপি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ শতক জমির উপর নির্মিত ১৩টি ঘরের মধ্যে ৭টি ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। সেখানে শুধু ধু, ধু বালু চর। কোন ভাবে বোঝার উপায় নেই সেখানে ঘর ছিল। তবে এখনো ধ্বংস স্তুপের ইট, বালু, ও দেওয়ালের পলেস্তরা সারি সারি পড়ে আছে। নির্মাণাধীন বাকি ৬টি ঘরের তিন পাশে বিভিন্ন মৎস্য ঘের ও পুকুর। সেখানে শ্রমিকরা নতুন করে বাঁশ পুতে পাইলিং করে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করছে।
 
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, মুজিব বর্ষের প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ কলারোয়া উপজেলায় প্রথম দফায় ১০০টি ও দ্বিতীয় দফায় ২০টি সর্ব মোট ১২০ আশ্রয় প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে সাবেক (ইউএনও) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিসেস মৌসুমি জেরিন তৈলকুপি গ্রামে ২০শতক জমির উপর মোট ১৩টি ঘর নির্মাণ করেন। এর মধ্যে ৭টি ঘর নির্মাণ করা হয় পুকুর পাড়ে। পুকুরপাড়ে ঘরগুলো তৈরীর সময় উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে বাঁধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কথা আমলে না নিয়ে ঘরগুলি তৈরি করেন। নির্মাণ কাজে ত্রুটির কারণে অল্প দিনের মধ্যেই ঘরগুলো ফাঁটল ও ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পুকুর ভরাটের জন্য আরও ৬ লাখ টাকা খরচ করেন উপজেলা অফিস থেকে। গত ৪ তারিখে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৈলকুপি গ্রামের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর অন্যস্থানে তৈরীর জন্য ভেঙে ফেলেন। ঘর নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি ছিল। ঘরে ফাঁটল দেখা দেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ৭টি ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ৩ থেকে ৪ মাস আগে তিনি যোগদান করেছেন। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সময়ে এ ঘর নির্মাণ করা হয়। পুকুর পাড়ে ঘরগুলি নির্মাণ হওয়ায় মাটি দিয়ে কিছুদিন পূর্বে প্যালাসাইটিং করে ঘর গুলি রক্ষা করা হয়। কিন্তু ভবিষৎতে বৃষ্টি হলে ধসে পড়তে পারে। উপকার ভোগীদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘরগুলো ভাঙা হয়েছে। উপকারভোগীদের জন্য সোনাবাড়ীয় ইউনিয়নের ভাদিয়ালিতে ঘরগুলো নির্মাণ করা হবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video