রবিবার, ২০২৪ নভেম্বর ১০, ২৬ কার্তিক ১৪৩১
#
বাঁশখালী বাঁশখালী

তীব্র তাপদাহের মধ্যে বাড়ছে লোডশেডিং সুপেয় পানি সংকটে বাঁশখালী উপকূলের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২৪ এপ্রিল ২২, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন
#

২২ এপ্রিল (সোমবার) তীব্র তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুৎ লোডশেডিং, এতে একদিকে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন অপরদিকে সুপেয় পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলের লক্ষাধিক পরিবার।

অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহের কারণে সারাদেশের ন্যায় এমনিতেই হাহাকার পুরো বাঁশখালীর জনজীবন। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে উপকূলজুড়ে। উপকূলের অগভীর নলকূপ গুলোতে উঠছেনা পানি, বিদ্যুৎ চালিত মোটর ও (সাবমাসিবল পাম্প) এর সাহায্যে যেসব গভীর নলকূপ থেকে সুপেয় পানি উত্তোলন করা হত, ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে ওইসব নলকূপ গুলোতেও যথাসময়ে মিলছেনা বিশুদ্ধ পানি। এতে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে উপকূলে বসবাসরত লক্ষাধিক পরিবারের মানুষ।

বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি, ছনুয়া, শেখেরখীল, চাম্বল, গণ্ডামারা -বড়ঘোনা, শীলকূপ, সরল, রত্নপুর, খানখানাবাদ, কাথরিয়া, বাহারচড়া, বৈলছড়,কালীপুর, পুকুরিয়া প্রেমাশিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মোটর চালিত নলকূপ গুলোতে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে শত শত নারী-পুরুষ কলসি হাতে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও বিদ্যুৎ না থাকায় মিলছেনা পানি। এছাড়াও তীব্র তাপদাহের মধ্যে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কারণে দিশেহারা জনজীবন।

পরিদর্শনকালে গণ্ডামারার মোহাম্মদ উল্লাহ, আরেফা খাতুন, ছনুয়ার মাবিয়া খাতুন, চাম্বলের ইনু মিয়া, বড়ঘোনার মোঃ বেদার উদ্দিনসহ বেশ কিছু মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ের চাপাকল গুলো একেবারেই অকেজো হয়ে গেছে। আর অগভীর নলকূপ গুলোরও একই অবস্থা। এছাড়াও যে সব গভীর নলকূপ রয়েছে ওইসব নলকূপ থেকে বিদ্যুৎ মোটর ও সাবমাসিবল পাম্পের সহযোগিতা ব্যতীত পানি উত্তোলন করা অসম্ভব। অনেকে বলেন, ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকলেও মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল আসে অতিরিক্ত। অথচ এই গরমের মাঝে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে রাতে ঘুমাতেও পারিনা। ভুতুড়ে  বিলের মতো অনিয়ম ও দূর্ণীতি দ্রুত বন্ধ করতে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ যথাযথ রেখে খাদ্য পানির সংকট নিরসন করতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভুক্তভোগীরা।

এরই মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বিশুদ্ধ পানির এই সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠেছে।তাছাড়া উপকূলীয় এলাকায় গভীর নলকূপের সংখ্যাও অতি নগন্য। যার ফলে সুপেয় পানির সংকট প্রবল। বিদ্যুৎ না আসা পর্যন্ত পানির অপেক্ষায় শত শত নারী-পুরুষকে কলসি হাতে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।এসময় তারা আরো বলেন, একসময় চাপাকল থেকে ভালো পানি যেতো। তবে ইদানিং কৃষি সেচের জন্যে ডীপকল বেড়ে যাওয়াতে সাম্প্রতিকের সেই চাপাকল গুলো একেবারেই অকেজো হয়ে গেছে। এই তীব্র তাপদাহের মধ্যে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সংকট নিরসন না হলে উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী জনজীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই বিদ্যুৎ সংকট নিরসন পূর্বক উপকূলের বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছে বাঁশখালী উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী সচেতন মহল।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, তীব্র তাপদাহের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। আর বিদ্যুৎ লোডশেডিং শুধু বাঁশখালীতে নয়, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশাকরি খুব শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে। এই সংকট নিরসনের বিষয়ে আমাদের জেলা প্রশাসক মহোদয়ও  বৈঠকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে যাচ্ছেন, বিদ্যুৎ সংকট নিরসন হলে আশাকরি সুপেয় পানির সংকট আর থাকবেনা।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video