চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সব্যসাচী নাথ। যিনি অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে দিনের পর দিন নিজের সেচ্ছাচারিতায় কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।
অবশেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (৩ মার্চ) তাকে বদলি করে বাশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণের জন্য এক প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
জানা যায়, এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নানা অনিয়মের বিষয়ে একাধিকবার তদন্ত কমিটির তদন্তে সত্যতা মিললেও সাবেক সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকার কারনে বারবার বদলি করা হলেও বদলির আদেশ স্থগিত রেখে দিনের পর দিন বহাল তবিয়তে থাকেন তিনি।
এছাড়া এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করোনা ভ্যাক্সিন বিক্রি, করোনা টিকা বিতরণকারী সেচ্ছাসেবীদের টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের টাকা ভূয়া ভাউচারে নিজের পকেটে ডুকানো সহ অনিয়ম সেচ্ছাচারিতা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
গত বছরের ২৭ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন পটিয়া পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল। এতে তিনি উল্লেখ করেন, দুই লাখ বাসিন্দার পটিয়া পৌরসভায় একটি কেন্দ্রেই কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই কেন্দ্র বৃদ্ধির কথা জানালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তা কর্ণপাত করেননি। পরে উচ্চ মহলের সঙ্গে আলাপ করে পৌরসভায় নয়টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্ট রুল না মেনে পৌরসভার সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন তিনি। এছাড়া কোভিড-১৯ টিকার দায়িত্ব পালনকারী স্বেচ্ছাসেবী, গ্রাম পুলিশ, আনসারদের জন্য আসা সরকারি বরাদ্দের টাকাও আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, করোনার ঝুঁকিতে থাকা মেয়র আইয়ুব বাবুলের পরিবারের সদস্যদের টিকা দিতে বললে বিভিন্ন অজুহাতে বাবুল ও তার পরিবারকে করোনার টিকা দেননি সব্যসাচী। পরে লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি টিকা নিয়েছেন। এছাড়া বাবুলের একমাত্র ছেলে আতিক শাহরিয়ার মাহির ১৮ বছর পূর্ণ হলেও বারবার অনুরোধের পরও ছেলের টিকার ব্যবস্থা করেননি সব্যসাচী। পরিশেষে বাবুলের একমাত্র ছেলে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারী স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব বরাবরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি চিঠি দেন। এ চিঠির আমলে নিয়ে তাকে ৩ মার্চ বদলির আদেশ দেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
এইদিকে এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলির খবর শুনে স্বাস্থ্য বিভাগ সহ সংস্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল।
মন্তব্য করুন