শুক্রবার, ২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
#
পটিয়া পটিয়া

নতুন ব্রিজ টু পটিয়া রুটে অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম্যে অসহায় বৈধ গাড়ী, নীরব চাঁদাবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২৪ মার্চ ২৮, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
#

চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়া রুটে বিরামহীনভাবে চলাচল করছে ফিটনেসবিহীন ও লাইন্সেসবিহীন গাড়ি। হিউম্যান হলার গাড়িকে মিনি বাসে রূপান্তরিত করে নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়া রুটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এমন লক্কর ঝক্কর শত শত যানবাহন। নতুন ব্রিজ এলাকায় বের হলেই চোখে পড়ে এ ধরনের যানবাহন। অভিযানে এসব গাড়ি চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকলেও মালিক-শ্রমিক সমিতি ও সংগঠনের নামে সড়কে নামানো হচ্ছে এসব গাড়ি।

লক্কর ঝক্কর এ সব গাড়ি সড়কে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করলেও দেখার জন্য কেউ নেই। ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে ট্রাফিক আইন।

ফিটনেসবিহীন ও লাইন্সেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলাচল করলে আটক ও জরিমানাও করছে ট্রাফিক পুলিশ। এরপরও থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য। ফলে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এসব গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

পরিবহন নেতাদের ম্যানেজ করে একশ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট অদক্ষ ড্রাইভারদের হাতে এসব গাড়ি তুলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ঝুঁকি ও যাত্রীদের নিকট হতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। যার দরুন যাত্রী ও ড্রাইভারদের সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে।

নতুন ব্রিজ এলাকায় কয়েকজন যাত্রীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকরা অবাধে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামছে। রুটপারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির কারণে নিত্য ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। চালকের লাইসেন্স আছে কি নেই তা যাচাই করার জন্য পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। ড্রাইভারদের যদি লাইসেন্স না থাকে তাহলে আমরা থাকি বিপদে। শুনেছি ড্রাইভাররা টাকা দিয়ে নাকি ডুবলিকেট লাইসেন্স কিনে নেয়।

জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন আখ্যা দিয়ে চট্টগ্রামে হিউম্যান হলার গাড়ি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করলেও সেসব গাড়ি সংস্কার করে মিনি বাসে রূপান্তরিত করে নতুন রূপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়া রুটে। হিউম্যান হলার ও লক্ষর ঝক্কর এইসব গাড়ির লাইনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। দৈনিক ও মাসিক মাসোহারা নিয়ে এসব অনিবন্ধিত গাড়ীর লাইন নিয়ন্ত্রণ নিতে নতুন ব্রিজ এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রোড পানমিট বিহীন এইসব গাড়িতে প্রতিমাসে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট পরিবহন সমিতির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জানা যায় আসন্ন ঈদের আগে এবং পরে যাত্রী থেকে বাড়তি বাড়া নেওয়া এবং সিন্ডিকেটের ধার্য্য করা চাঁদা দেয়া নেয়া নিয়ে নতুন ব্রিজ এলাকায় বিলাসী মিনিবাস বনাম হিউম্যান হালার মিনিবাস শ্রমিকের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসছে। এই লাইনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি মারামারি এবং সম্রাট হোসেন মাহদ্দাম নামে এক ড্রাইভারকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগও উঠে এসেছে।

বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ও রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিনিবাস সমিতির এক শ্রমিক নেতা প্রতিবেদককে বলেন, মিনিবাস সমিতির নিয়ন্ত্রণে ডকুমেন্টসবিহীন গাড়ি শাহ আমানত ব্রিজ টু পটিয়া বাদামতল শান্তিরহাট চলাচল করা ১২০ টি অবৈধ গাড়ি। গাড়ি গুলো ৩০০০ টাকা মাসোহারা এবং প্রতিদিন ৩৬০ টাকা ওয়াবিলের নামে আদায় করে চলে।

এই বিষয়ে মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক হাজী ইউনূস কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা নিয়মের বাইরে কোন টাকা নিই না এবং আমরা রসিদের মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকি। এখানে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই এগুলো প্রশাসনের নজরে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন ব্রিজ এলাকার টি আই অপূর্ব পাল বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব যেটা সেটা পালন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। অবৈধ গাড়ি জানতে পারলে গাড়িগুলো জব্দ করে ডাম্পিং এ পাঠিয়ে দিই। তিনি আরো জানান এই নতুন ব্রিজ এলাকার বিষয়টি আমাদের উদ্ধতন কর্মকর্তা সবাই জানে এবং বার বার চেষ্টা করেও সমাধান করা যায়নি। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে ফিটনেস বিহীন কোন গাড়ি সড়কে চলাচল করতে না পারে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video